ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পবিত্র শবে বরাত। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে মসজিদগুলোতে ঢল নেমেছে মুসল্লিদের। এশার নামাজের সময় দেশের প্রায় প্রতিটি মসজিদই ভরে গেছে কানায় কানায়।নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, তাসবিহ-তাহলিলসহ বিভিন্ন নফল ইবাদতের মধ্য দিয়ে রাতটি উদযাপন করছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা।
এদিকে পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে রাজধানীতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিশেষ করে বায়তুল মোকাররম, মিরপুর শাহ আলী মাজার, আজিমপুর কবরস্থান ঘিরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। রাজধানীর সব থানা ও পাড়া মহল্লার মসজিদ ও কবরস্থানে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থার কমকর্তারা মাঠে রয়েছেন।
ইসলামি বিধান মতে বছরের যে কয়েকটি রাত ফজিলতপূর্ণ এর মধ্যে শবে বরাত একটি। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশে রাতটি ততটা গুরুত্বের সঙ্গে পালিত না হলেও এই উপমহাদেশে রাতটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। এই রাতকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় আবেগ ও ভাবগাম্ভীর্য বিরাজ করে। অনেকে ইবাদত-বন্দেগিতে সারা রাত কাটিয়ে থাকেন। ইসলামি পণ্ডিতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই রাতের বিশেষ কোনো ইবাদত নেই। তবে কোনো কোনো হাদিসে ‘মধ্যশাবানের’ রাতের ফজিলতের কথা উল্লেখ আছে। সে হিসেবেই ১৪ শাবান দিবাগত রাতটি শবে বরাত বা লাইলাতুল বরাত হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। এই রাতের ইবাদত নফল। কেউ না করলেও তাতে দোষের কিছু নেই।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছে, বিস্ফোরকদ্রব্য, আতশবাজি, পটকাবাজিসহ অন্যান্য ক্ষতিকর ও দূষণীয় দ্রব্য বহন এবং ফোটানো যাবে না শবেবরাত উপলক্ষে।
এদিকে শবে বরাত উপলক্ষে মৌসুমি ভিক্ষুকদের ঢল নেমেছে রাজধানীতে। এই রাতকে কেন্দ্র করে ঢাকার বাইরে থেকে কয়েক হাজার ভিক্ষুক রাজধানীতে এসেছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সওয়াবের আশায় এই রাতে বেশি বেশি দান করে থাকেন।
শবে বরাত উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আজ বাদ মাগরিব থেকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে রাতব্যাপী কোরআন তেলাওয়াত, হামদ-নাত, ওয়াজ মাহফিল, মিলাদ, জিকির ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করেছে।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ‘শবে বরাতের ফজিলত’ শিরোনামে ওয়াজ পেশ করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মুহিউদ্দীন কাসেমী। রাত ৯টার দিকে ‘ইবাদত ও দোয়ার গুরুত্ব’ শিরোনামে বয়ান করেন বিশিষ্ট ইসলামিক চিন্তাবিদ মাওলানা হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদী। রাত ১১টার দিকে ‘শবে বরাত ও রমজানের তাৎপর্য’ শিরোনামে ওয়াজ করবেন ঢাকার মিরপুরস্থ জামিয়া আরাবিয়ার মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহিদুযযামান। রাত ১২টার দিকে ‘জিকিরের গুরুত্ব ও ফজিলত’ শিরোনামে ওয়াজ করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা এহসানুল হক জিলানী। রাত ২টার দিকে ‘তাহাজ্জুদের গুরুত্ব ও ফযিলত’ শিরোনামে ওয়াজ করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।সবশেষে ফজরের নামাজের পর আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।