‘বিএনপি খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচনে আসবে না, তারা এভাবে যে ভাঙা রেকর্ড বাজাচ্ছেন। এতে লাভ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের । তিনি বলেন, তারা (বিএনপি)না আসলেও নির্বাচনী ট্রেন তাদের জন্য থেমে থাকবে না। দেশের সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন হবে। এটি সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা।’
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি আগামী জাতীয় নির্বাচনও বর্জন করলে দলের কেউ ভোটে আসলে তাকে ঠেকাতে পারবে না বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি জানিয়েছেন, বিএনপিকে ভোটে আনতে সরকারের কোনো উদ্যোগ থাকবে না। গতকাল গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নির্বাচনে না এলে সরকারের কিছু করার নেই। তারা ভোটে আসতে কাউকে জোর করতে পারে না। রাজনৈতিক অঙ্গণে গুঞ্জন আছে, বিএনপি ভোটে না এলেও এবার দলের একটি অংশ নির্বাচনে যাবে। এই বিষয়টি নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের কাছে প্রশ্ন রাখেন সাংবাদিকরা। জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা নির্বাচন আসলে বলা যাবে। তবে সরকার এ ধরনের কোন উদ্যোগ নেবে না।’
‘তবে যদি কেউ নির্বাচনে আসতে চায় তাহলে তাকে তো আর কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।’
বিএনপিকে ভোটে আনতে সরকারের কি কোনো উদ্যোগই থাকবে না?- জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘তারা না আসলে সরকার কেন তাদের অনুরোধ করবে?’
খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে হতে না দেয়ার বিষয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যকে ‘ভাঙা রেকর্ড’ আখ্যা দিয়ে এসব বক্তব্য কেন দেয়া হয় সে প্রশ্নও রাখেন কাদের।‘বিএনপির আন্দোলনের কোনো ত্রুটি নেই। কিন্তু জনগণ তাদের আন্দোলনে সাড়া দিচ্ছে না। এজন্য তারা অফিসে বসে ভাঙা রেকর্ড বাজাচ্ছেন।’
‘বিএনপি আগেও নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করেছেন, জনগণ তা হতে দেয়নি। এবারও তাদের প্রতিহত করবে জনগণ। তারা কখনোই দেশে নির্বাচন বন্ধ করতে পারবে না।’মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে আসবে না এটা তাদের সিদ্ধান্ত। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। নির্বাচনে আসার বিষয়টি তাদের অধিকার। সেটা যদি তারা না চায় তাহলে এখানে সরকারের কিছু করার নেই।’
২০১৪ সালের নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপির সন্ত্রাসের কথা তুলে ধরে কাদের বলেন, ‘কানাডার আদালত তাদের সন্ত্রাসী দল হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এবার নির্বাচনে তারা এমন চেষ্টা করলে সন্ত্রাসী দল হিসেবে নাম মুছতে পারবে না।’
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি পূরণ হচ্ছে না, এটা আগেই জানিয়েছে ক্ষমতাসীন দল। আর নির্বাচন পরিচালনার সময় সংসদের সব দলের নেতাদেরকে নিয়ে সরকার গঠন হলে সেখানেও বিএনপির স্থান হবে না বলেও জানান কাদের । তিনি বলেন, ‘জাতীয় সংসদে বিএনপির প্রতিনিধিত্ব না থাকায় তাদের নির্বাচনকালীন সরকারের টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাদের আর কোনো প্রস্তাবও দেয়া হবে না।’, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে তাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। সবাই জানেন। তারা তা প্রত্যাখান করেছেন। এবার সাংবিধানিকভাবেই নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রী হিসেবে তাদের আর থাকার সুযোগ নেই।’
প্রধানমন্ত্রী তার সংবাদ সম্মেলনে দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এবং পলাতক আসামি তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন করায় বিএনপির সমালোচনা করেছিলেন। আর এর জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তারেক যোগ্য বলেই তারা নেতা বানিয়েছেন, এখানে প্রধানমন্ত্রী কেন মাথা ঘামাচ্ছে।ফখরুলের বক্তব্যের আবার জবাব দিয়ে কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সত্য কথা বললেই বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়। তারেক রহমান দুর্নীতিগ্রস্ত একজন ব্যক্তি। আদালত তাকে দুর্নীতির দায়ে সাজা দিয়েছে। আর খালেদা জিয়া গ্রেপ্তারের আগে দিয়ে তাড়াহুড়া করে তাদের সংবিধানের ৭ ধারা সংশোধন করেছে শুধুমাত্র তারেক রহমানকে দলের প্রধান করতে। ফলে এ থেকে প্রমাণিত হয়েছে বিএনপি একটি দুর্নীতিগ্রস্ত একটি দল।’
তারেক রহমানকে দেশে থেকে ফিরে আনা প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ‘এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বিস্তারিত কথা বলেছেন। এটা নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। তবে সে যেহেতু সাজাপ্রাপ্ত আসামি তাই অবশ্যই তাকে ফিরে আনতে সরকারের চেষ্টা আছে, থাকবে।’, ‘তবে সমস্যা হচ্ছে তারেক দেশে ফিরে আসুক এটা বিএনপিরই অনেক নেতা চায় না।’