দেশের সবাইকে যুক্তফ্রন্টের পেছনে এক্যবদ্ধ হতে হবে বলে মনে করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তিনি বলেছেন, মানুষকে জাগাতে হবে।
রবিবার (২৭ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে যুক্তফ্রন্টের শরিক দল নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ইফতার মাহফিলে ‘গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই’ শীর্ষক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে ‘যুক্তফ্রন্ট’ নামে নতুন একটি রাজনৈতিক জোট গত বছরের ৪ ডিসেম্বর আত্মপ্রকাশ করে। ওইদিন রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসায় এক বৈঠকে ‘যুক্তফ্রন্ট’ নামে এই জোট গঠন করা হয়। প্রাথমিকভাবে যুক্তফ্রন্টে চারটি দল রয়েছে।
দলগুলো হলো- বিকল্পধারা বাংলাদেশ, আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, আমাদের পেছনে সংহত হতে হবে। আমাদের পেছনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাই ভবিষ্যতে যারাই ক্ষমতায় আসতে চান, তারা বুঝেশুনে চলেন। তারা যেন বুঝতে পারেন দেশের মানুষ দুর্নীতিকে ঘৃণা করে। দুর্নীতি আমরা সহ্য করতে রাজি নই। অনেক সহ্য করেছি। আর করবো না।
তিনি বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশের যে প্রেক্ষাপটে যে কথা বলছি, তাতে মালয়েশিয়ার মাহাথির বিন মোহাম্মদ খুব প্রাসঙ্গিক। মালয়েশিয়ার সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক অনেক উন্নয়ন করেছেন। অনেক কিছু বানিয়ে দেশটাকে আরও উঁচু করেছেন। কিন্তু কর্মশালা করেছেন দুর্নীতি করে। দেশেটাকে শেষ করে দিয়েছেন। মাহাথির ও জনগণের যে বিদ্রোহ, তা ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে। তিনি একটা কথাই বললেন,আমার দেশে এই দুর্নীতি সহ্য করবো না।’
সাবেক এই রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম। এই সংগ্রাম দেশে আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার।’ তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক গুম, নিহত দেখেছি। গ্রেনেড মারাও দেখেছি। আর সহ্য করবো না।আমরা অনেক অগণতন্ত্র দেখেছি। সুপ্রিম কোর্টের বিচারের পরে আইন মানা হয় না। ট্রাইব্যুনালের বিচারের পরে রায় মানা হয় না। হাজার হাজার মানুষ জেলের ভেতরে আছে, কতদিন চলবে এগুলো? আমরা সহ্য করতে রাজি না। বাংলাদেশের জনগণ জেগে উঠেছে ।এই জাগরণ থাকবে ইনশল্লাহ। আমরাও তাদের সঙ্গে থাকবো।’
অনুষ্ঠানে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশব্যাপী চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে নিহতদের পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশ করুন। প্রমাণ ছাড়া যদি বদির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না যায়, তাহলে যারা এই অভিযানে মারা গেছেন, তাদের নাম পরিচয়, কী কী অভিযোগ, কী মামলায় কী প্রমাণ আছে তাদের বিরুদ্ধে, সেটা প্রকাশ করতে হবে। অপেক্ষা করুন দিন আসবে এই রোজার মাসে বলছি, এর সঙ্গে জড়িতদের কাউকে ছাড়বো না। ’
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘যুক্তফ্রন্ট গঠনের পরে অনেক ভয় পেয়ে গেছেন। নজরদারি করার জন্য বলছেন। শুরু করার আগেই ভূমিকম্প হয়ে গেছে। আজকে ইফতার নিয়েও অনেক কথা হচ্ছে। আরে আসল খেলা তো হবে ময়দানে ও মাঠে। মাঠ ছাড়তে হবে। দেশও ছাড়তে হবে। কোথায় যাবেন চিন্তা করুন। আমরা মাঠের ফ্রন্টের খেলোয়াড়। পেছনের নয়।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণস্বাস্থ্য ট্রাস্টি বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক প্রমুখ।