আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, নির্বাচন হচ্ছে একটি যুদ্ধের মতো। যে যুদ্ধে জয় হওয়ার জন্য দক্ষ প্রার্থী, সাহসী কর্মী সমর্থক থাকতে হয়- যা আওয়ামী লীগের মধ্যে রয়েছে। দুনিয়ার কোনো নির্বাচনই শতভাগ সুষ্ঠু হয় না। আমেরিকার নির্বাচনসহ বিশ্বের অনেক দেশের নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। বর্তমানে বিএনপিতে দক্ষ কোনো প্রার্থী, সাহসী কর্মী কিংবা সমর্থক নেই।
তিনি বলেন, তাই তারা যে কোনো নির্বাচনকেই মিথ্যে অপবাদ দিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তারা মাঠে নেই, নির্বাচনে নেই। তারা শুধু সংবাদ সম্মেলনের মধ্যে আছে। বিএনপি মূলত প্রেস ব্রিফিংয়ে চ্যাম্পিয়ন।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, সংসদ সদস্য শিরিন আখতার, প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
নাসিম বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। কিছু অসঙ্গতি থাকতেই পারে। নির্বাচনে ছোটখাট ত্রুটি থাকেই। সার্বিকভাবে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে পরাজয় হলেই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, নির্বাচন বাতিলের দাবি জানায়, এটা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
নির্বাচন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বিষয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলতে কিছু নেই। আওয়ামী লীগ কখনও যুদ্ধাপরাধী, যুদ্ধাপরাধীদের লালন পালনকারী, আগুনসন্ত্রাসী বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন বিষয়ক সংলাপ করবে না। বিএনপি আগামী জাতীয় নির্বাচনে আসলে, অভিনন্দন জানাব কিন্তু জোর করে নির্বাচনে নিয়ে আসবো না।
আমরা সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করবো জানিয়ে নাসিম বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, বর্তমান সরকারের অধিনেই নির্বাচন হবে। সামনে বিএনপির সুযোগ, এ সুযোগটি হচ্ছে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা। নির্বাচন একটি রাজনৈতিক দলকে শক্তিশালী করে। প্রার্থী, কর্মী, সমর্থকদের চাঙ্গা করে।
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে না আসলে তাদের অস্তিত্ব আর থাকবে না। আমরা সংবিধান অনুযায়ী পাঁচ বছর ক্ষমতায় থেকে দেশ চালাচ্ছি। বিএনপি অতীতে এক মাসও টিকতে পারেনি। তারা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কোথায় ছিল। ২১টি বছর তারা আমাদের যে নির্যাতন, নিপীড়ন করছে তা বলে শেষ করা যাবে না।
তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশ উন্নয়নে যে ভূমিকা রাখছেন তাতে নিশ্চিত আগামীতেও প্রধানমন্ত্রী হবেন। দেশের মানুষের হৃদয় জয় করেছেন তিনি, তার কোনো ভয় নেই। নির্বাচন করার জন্য কোনো দলের সঙ্গে সংলাপের প্রয়োজন নেই। সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন হবে। সরকার নির্বাহী ক্ষমতা ন্যাস্ত করবে ইসির কাছে। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করাসহ দেশবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন, সংসদ সদস্য শিরিন আখতার, প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। সেমিনারের সিনিয়র সাংবাদিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক, সমাজকর্মী, এনজিওকর্মী বক্তব্য রাখেন।