বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন- কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে।
আজ বুধবার সকালে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন- শঙ্কা তো বটেই। এক হচ্ছে রাজনীতি থেকে, দুই হচ্ছে নির্বাচন থেকে এবং এখন আশঙ্কা যেটা হচ্ছে, সেটা হলো পৃথিবী থেকে খালেদা জিয়াকে সরিয়ে দেয়ার কোনও ষড়যন্ত্র হচ্ছে কী না— সেটাই এখন আমাদের আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন- খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের কথা আমরা বহুবার বলেছি। এখন তার চিকিৎসার সুযোগ পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে না। তাকে একটা বিশেষায়িত হাসপাতালে নেয়ার কথা বলা হয়েছিল— কিন্তু সরকার নিচ্ছে না। এখন আর কোনও চিকিৎসককে তার সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। উদ্দেশ্যটা কী? উদ্দেশ্য কি আপনারা তাকে সলিটারি কনফাইনমেন্টে রেখে শেষ করে দিতে চান?
তিনি বলেন, ‘কারাবিধি অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষই যথেষ্ট— একজন ভিজিটরকে সাক্ষাৎ দেওয়ার জন্য। সেই ভিজিটরদের মধ্যে পড়েন আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে পড়ে রাজনৈতিক সহকর্মী এবং আইনজীবী— এটা জেলকোডেই আছে। জেলকোডের ২০০৬ এর ৬৬৩ থেকে ৬৮৮ ধারামতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে দেখা করার অধিকার রয়েছে। এটা তার সাংবিধানিক অধিকার।খালেদা জিয়ার আত্মীয় স্বজন বার বার চিঠি দিলেও কারাকর্তৃপক্ষ বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন’।
‘তার সাংবিধানিক অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এবং এটি করে তারা (সরকার) প্রকৃতপক্ষে, মানবাধিকার লংঘন করছেন, সংবিধান লংঘন করছেন’- অভিযোগ ফখরুলের।
তিনি বলেন, ‘৩০ জুন সর্বশেষ খালেদা জিয়ার আত্মীয়-স্বজনরা তার সঙ্গে দেখা করেছেন। এরপর গত ১০ দিনে কয়েক দফা চেষ্টা করেও খালেদা জিয়ার আত্মীয়-স্বজনরা তার সঙ্গে দেখা করতে পারেননি, আমরাও দেখা করতে পারিনি, আইনজীবীরাও দেখা করতে পারেননি।’
‘জেল সুপারকে বলা হলে, তিনি বলেন আইজি প্রিজনকে বলেন। আইজি প্রিজনকে বলা হলে, তিনি বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বললে, তিনি বলেন এক নম্বরের সম্মতি ছাড়া আমার পক্ষে কিছু করা সম্ভব না। আমি নিশ্চয়ই আপনাদেরকে বিষয়টি বোঝাতে পেরেছি’— বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি আরও বলেন- ইতিহাস আপনাদের ক্ষমা করবে না। তাই আমরা আবার বলতে চাই, তাকে মুক্তি দিয়ে, সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেশে একটা পরিবেশ সৃষ্টি করুন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ ।