‘সেইদিন আমি হাসিমুখে কথা বলেছিলাম একটা খুশির খবর শুনে। আর তখনই একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন দুর্ঘটনার বিষয়ে। আমি তখন সেই খবরটি জানতাম না। আমি তখন বললাম- আজকের সংবাদ সম্মেলনের সাথে এই বিষয় সম্পৃক্ত নয়। তারপরেও কিছু কথার প্রেক্ষিতে দুর্ঘটনার বিষয়ে দুই-একটা কথা বলি। আমি সেটা হাসিমুখেই বলি।’
মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর মতিঝিলস্থ বিসিআইসি মিলনায়তনে শ্রমিক-কর্মচারী-পেশাজীবী মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ এর প্রতিনিধি সম্মেলনে হাসির কারণ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
রোববার রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে জাবালে নূর বাসের ধাক্কায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে নৌমন্ত্রীকে প্রশ্ন করার পর হাসিমুখে উত্তর দেয়ায় নৌমন্ত্রী আজ তার কারণ বর্ণনা করেন।
হাসির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, সচিবালয়ে আমরা একটা ঘটনা নিয়ে উৎফুল্ল ছিলাম, সেইদিন ৬৮ বছর পর মোংলা বন্দরের জন্য ক্রেন কিনেছিলাম। সেটার চুক্তিপত্র আমরা সাক্ষর করেছিলাম। সেটা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন হচ্ছিল। সেখানে বক্তৃতা দেয়ার সময় আমি হাসি মুখে কথা বলছিলাম।
‘তাছাড়া আমি সবসময় একটু হাসিমুখেই কথা বলার চেষ্টা করি। এটা কি আমার অপরাধ?’ কথাটি হাসতে হাসতে বললেন নৌমন্ত্রী।
‘হাসিমুখে কথা বললে নাকি বেশিদিন বেঁচে থাকা যায়, সুস্থ থাকা যায়, হার্ট ভালো থাকে। এতে যদি কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকি তাহলে আমি দুঃখিত ও লজ্জিত। এতে যারা শোকাহত হয়েছেন তাদের কাছে বিষয়টি ক্ষমা সুন্দরভাবে নেয়ার জন্য আহ্বান করছি।’
এছাড়া অনুষ্ঠানের শুরুতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই শিক্ষার্থীর জন্য শোক প্রকাশ করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, অনেকেই আমাকে দোষারোপ করেন যে- আমি বাস ড্রাইভারদের পক্ষ নিই। কথাটা ভুল। আমি বহু বছর ধরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছি। আপনাদের অবগতির জন্য বলতে চাই, এরশাদের আমলে আমরা সড়ক দুর্ঘটনা রোধে একটা কমিটি গঠন করি। সেই কমিটিতে ১১২টা সুপারিশ দেয়া হয়। সেগুলোর গুটি কয়েক পাস করা হয়েছে। বাকিগুলোর কোনও হদিস পরবর্তীতে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপরও তো এসেছে বাকশালি সরকার। কিছু বলার নাই।
নৌমন্ত্রী সেদিনের দুর্ঘটনার জন্য দোষীদের শাস্তি পাওয়ার বিষয়টি পুনরায় ব্যক্ত করে বলেন, ‘দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হলে কোনও সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করা হবে না।’
সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক ইসমত কাদির গামার সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা হেলাল মোর্শেদ বীরবিক্রম, বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগের সিবিএ নেতা জহিরুল ইসলাম ও বিআইডব্লিউটিসির সিবিএ সভাপতি মহসিন ভূঁইয়া প্রমুখ।