সড়ক পরিবহন আইন পাস হলে রাস্তায় মানুষের মৃত্যু হার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে দাবি করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নর জবাবে তিনি এ কথা জানান।
শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নেয়া হয়েছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘তাদের (আন্দোলনরত শিক্ষার্থী) যে দাবিগুলো সবগুলোই সমাধান কিন্তু সড়ক পরিবহন আইনের মধ্যে রয়েছে। আইনটা পাস হলে রাস্তায় পাখির মতো মাছির মতো মানুষ মরার যে প্রবণতা তার ওপর একটা নিয়ন্ত্রণ আরোপ হবে।’
সড়ক পরিবহন আইন পাস হলে জনসাধারণের মাঝে সচেতনা তৈরি হবে জানিয়ে কাদের বলেন, ‘আইনটি হলে মানুষ আগের চেয়ে সচেতন হবে। কঠিন শাস্তি থাকলে সেখানে সতর্কতা আসেই। রাস্তায় গাড়ি চলাচলে রেষারেষি এমন কি পথচারীদের রাস্তায় চলাচলের নিয়ম। পথ পারাপারের নিয়ম এখানে যুক্ত থাকবে।
রাস্তায় চলাচলের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সড়কমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যাতে ট্রাফিক আইন মেনে চলে সে ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়েরও একটা দায়িত্ব আছে। একজন যখন মোবাইলে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হয় খেলায় থাকে না একটা ছুটন্ত গাড়ি এসে চাপা দিয়ে যাচ্ছে। এগুলো রোধে সব কিছু আইনের মধ্যে আছে।’
আইনে কি আছে তার বিস্তারিত না বলে সাংবাদিকদের ওয়েব সাইড থেকে পড়ে নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, ‘আইনটা এখন খসড়া আকারে আছে। আমি আশা করি আগামী ক্যাবিনেটে এটি অ্যাপ্রুভ হবে। পার্লামেন্টে পাশ হবে।’
আইনটি পাশ হলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
গত চার দিনে শিক্ষার্থীরা সড়কে চলাচলকারী গাড়িগুলোর বৈধ কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখছে। বাদ পড়েনি মন্ত্রী, পুলিশ, সাংবাদিকের গাড়িও। এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি মন্ত্রী কি চেকিং করিনি আপনাদের নিয়ে? আমি সবসময় রাস্তায় ছিলাম। সবসময় এ কাজ গুলো করেছি। তারা প্রথম দেখাচ্ছে এমন তো না, এটা বাংলাদেশে দেখিয়েছি আমি। আমি রাস্তায় গিয়ে চেকিং শুরু করেছি।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আইনটি পাস হলে সড়কের মামলাগুলোতে দ্রুত বিচার সম্ভব হবে। বিচারে দীর্ঘ সূত্রতার বিষয়ে আমরা পার্লামেন্ট আলোচনা করবো। প্রয়োগ না হলে তো আইন করে লাভ নেই। শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে যদি ভূমিকা রাখতে না পারে সে আইনের তো প্রয়োজন নেই।’
গাড়ি মালিকদের অতিরিক্ত টাকা জমা নেয়ায় চালকদের ওভার টেকিংয়ের প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সব বিষয়গুলোই নেক্সট ক্যাবিনেট মিটিংয়ে আলাপ করবো। যা যা প্রয়োজন সব কিছুই এ আইনে থাকবে। আমি মন্ত্রণালায়ে না থাকলেও পরবর্তিতে যারা আসবে, ইম্প্লিমেন্টেশনের ক্ষেত্রে শক্তি পাবে।’
উল্লেখ্য, সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আশ্বাস থাকা সত্ত্বে বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে আজ পঞ্চম দিনের মতো ঢাকাসহ সারাদেশে রাস্তায় অবস্থান করছে শিক্ষার্থীরা।