দেশের ব্যাপক এলাকা ভূমিকম্প ঝুঁকিতে: দুর্যোগমন্ত্রী

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন- সিসমিক জোন ম্যাপিংয়ে দেখা গেছে, বাংলাদেশের ব্যাপক এলাকা উচ্চ ও মধ্যম মাত্রার ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, ঘন জনবসতি এবং অনেক ক্ষেত্রে বিল্ডিং কোড বা নির্মাণ নীতিমালা অনুসরণ না করে ভবন ও স্থাপনা নির্মাণের কারণে ঝুঁকির মাত্রা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

রোববার বাংলাদেশ সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে দুই দিনব্যাপী ভূমিকম্প অনুশীলন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা করেন। আর্মি ওয়ার গেম সেন্টার এ অনুশীলনের আয়োজন করে।

ভূমিকম্প মোকাবেলায় একটি সুষ্ঠু কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা, মাঠপর্যায়ে কাজ করার জন্য যথাযথ বিকেন্দ্রীকরণ এবং সমাজের সর্বস্তরে জনগণের কার্যকরী অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন মন্ত্রী।

ত্রাণমন্ত্রী বলেন, ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় সব সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ ও প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। নিয়মিত মহড়া ও মানুষকে সচেতন করার পদক্ষেপ নিতে হবে। নিকট অতীতে বাংলাদেশ বড় ধরনের ভূমিকম্প মোকাবেলা করেনি। তাই এ অনুশীলন সাংগঠনিক দক্ষতা, যন্ত্রপাতি ব্যবহার, প্রশিক্ষণ পরিচালনা ও সকলের মধ্যে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে ঘাটতি নির্ধারণের পাশাপাশি তা পূরণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরও বলেন, ভূমিকম্পে আক্রান্ত হলে উদ্ধার হওয়ার আগ পর্যন্ত আটকে পড়ারা কিভাবে নিজেদের টিকিয়ে রাখবেন সেজন্য ঘরে অন্তত ২৪ ঘণ্টার জন্য শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি মজুদ রাখুন।

ভূমিকম্প মোকাবেলায় সরকারের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ নগর ও জেলার রিস্ক ম্যাপ তৈরি, সচেতনতা বৃদ্ধি ও ৩৩ হাজার নগর স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করা হয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন মার্কেটে, সচিবালয়ে, সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে এবং ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন শহর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভূমিকম্পবিষয়ক মহড়া করা হয়েছে।

মায়া বলেন, ভূমিকম্প পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবেলায় সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা বিবেচনা করে সরকার বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার উদ্ধার সরঞ্জামাদি প্রদান করছে। প্রয়োজনে আরও যন্ত্রপাতি প্রদান করা হবে। নির্দিষ্ট মাত্রার ভূমিকম্পের সময় গ্রাহকপর্যায়ে গ্যাস এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মোহাম্মদ নাজিমুদ্দিন, আর্মি ওয়ার গেম সেন্টারের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তোফায়েল আহমেদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, পুলিশ, র‌্যাব, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, রাজউক, ওয়াসা, ডেসা, সিটি করপোরেশন, স্থানীয় সরকার বিভাগ, সড়ক ও জনপথ বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।