প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮-তে দুর্বৃত্ত ও গডফাদাররা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকবে। এটি একটি শুভঙ্করের ফাঁকি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, ‘গতকাল তড়িঘড়ি করে মন্ত্রীপরিষদে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রীসভা। প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইন দুর্বৃত্ত ও গডফাদাররা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকবে। এটি একটি শুভঙ্করের ফাঁকি। যদিও এই আইন আদৌ সংসদে পাস হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নাগরিকরা। এ আইন নিরাপদ সড়কের জন্য পর্যাপ্ত নয়। এ আইন গণপরিবহনে নিরাপত্তা ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ ফিরিয়ে আসবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’
মঙ্গলবার (৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১ টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর অবিরাম হামলা অব্যাহত রেখেছে পুলিশ-ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এমন অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে যেভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর, সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের পাশাপাশি ছাত্রলীগ-যুবলীগ সশস্ত্র অবস্থায় হামলা করেছে তা দেখে দেশের মানুষ হতভম্ব।’
কোটা আন্দোলনকারীদের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আর কোন বাবা-মায়ের কোল খালি হোক আমি চাইনা- প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যও মানুষের মনে আতঙ্ক ধরিয়েছে। প্রতিনিয়ত মায়ের কোল খালি হচ্ছে গুম, খুন ও বিচারবর্হিভূত হত্যার মাধ্যমে। অবৈধ ক্ষমতা প্রলম্বিত করার জন্যই এ সর্বনাশা সহিংস নীতি প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করছে সরকার।কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতারনার কথা নিশ্চয়ই আপনাদের মনে আছে। এখন কি হচ্ছে?’
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উস্কানিদাতা হিসেবে দলের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকার উসকানির কথা বলে মামলা দিয়েছে বিএনপির মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতাদের নামে। বিএনপি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছে। সমর্থন দিয়েছে সকল রাজনৈতিক দলসহ সর্বস্তরের মানুষ। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের মন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সরকারের ভুল ধরিয়ে দিয়েছে। আপনারা তাদের সাধুবাদ জানালেন- এ কথা যদি উস্কানির পর্যায়ের না পড়ে তাহলে বিএনপি কোথায় উস্কানি দিল? কিন্তু মামলা দেয়া হলো বিএনপি নেতাদের নামে। স্বভাবনিষ্ঠুর প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এর চেয়ে ভাল কিছু আশা করা যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আলোকচিত্রী ও দৃক গ্যালারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলমকে গতকাল তার ধানমন্ডির বাসা থেকে অপহরণ করে কয়েক ঘণ্টা গুম রাখার পর গ্রেফতার দেখানো হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদের নামে শারিরীক নির্যাতন করা হয়। তাকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। এ ভোটারবিহীন অবৈধ সরকারের হাতে এখন আর কেউ নিরাপদ নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।