কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাসে পেট্রোল বোমা হামলায় ৮ যাত্রী নিহতের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় খালেদা জিয়াকে দেয়া ৬ মাসের জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের উপর শুনানি শেষ হয়েছে। রোববার এ বিষয়ে আদেশ দিবেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ শুনানি নিয়ে আদেশের জন্য এই দিন ধার্য করেন।
আপিল বিভাগে খালেদার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এরআগে সোমবার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মামলায় খালেদা জিয়াকে ৬ মাসের জামিন দেন। সে জামিন স্থগিত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
পরেরদিন মঙ্গলবার চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত জামিন স্থগিতের আবেদনটি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চে বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য নির্ধারণ করে দেন। সে ধারাবাহিকতায় আজ আপিল বিভাগে বিষয়টির শুনানি হয়।
২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুর এলাকায় একটি নৈশকোচে পেট্রোল বোমা হামলায় ৮ যাত্রী নিহত হয়। এ ঘটনায় হুকুমের আসামি করে হত্যা মামলার পাশাপাশি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা করে পুলিশ। পরবর্তীতে পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলাটি বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় রূপান্তর করা হয়।
এই মামলায় জামিন চেয়ে গত ১ জুলাই কুমিল্লার দায়রা জজ ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আবেদন করেন খালেদা জিয়া। ওই দিন বিচারক কে এম শামছুল আলমের বিশেষ আদালত খালেদা জিয়াকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তার জামিন আবেদনটি ৮ আগস্ট শুনানির জন্য রাখেন।
গত ১১ জুলাই এই মামলায় হাইকোর্টে ফৌজদারি আপিল করে খালেদার জামিন আবেদন করা হয়। সে আবেদনের শুনানি নিয়েই হাইকোর্ট ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে খালেদার জামিন আবেদন নিষ্পত্তি করতে কুমিল্লার আদালতকে নির্দেশ দেন। কিন্তু এরপর গত ২৫ জুলাই কুমিল্লার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ খালেদা জিয়ার জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন।
এরপর আবার এই মামলায় হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন খালেদা জিয়া। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ৬ আগস্ট এই মামলায় খালেদা জিয়াকে ৬ মাসের জামিন দিলেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজার রায় দেন। এই রায়ের পর থেকেই খালেদা জিয়া নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।
এই মামলায় তার ছেলে তারেক রহমানসহ অন্য পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছরের জেল ও জরিমানা করা হয়। ইতোমধ্যে কয়েকটি মামলায় খালেদা জিয়া জামিন পেলেও আরো কয়েকটি মামলায় তার এখনো জামিন মেলেনি।