প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সব সময় বিএনপি আতঙ্কে ভুগে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের প্রতি প্রকাশ্যেই সমর্থন জানিয়েছি। এটা অপরাধ হলে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে পুলিশ কর্মকর্তারা পর্যন্ত একই অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ার কথা। কিন্তু যে সরকার প্রার্থী, ভোটার এবং ভোট ছাড়া নিজেরাই নিজেদের নির্বাচিত ঘোষণা করে, জোর করে রাষ্ট্র চালাতে লজ্জাবোধ করে না, তাদের কাছ থেকে পক্ষপাতমূলক বক্তব্য ও আচরণ ছাড়া আর কি আশা করা যেতে পারে।’
শুক্রবার (১০ আগস্ট) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত যে নানা বাধা বিপত্ত্বির মধ্যেও মিডিয়া ও সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমে দেশবাসী প্রকৃত তথ্য পরিষ্কারভাবে জেনে গেছেন। ফলে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ক্রমাগত মিথ্যাচারে তারা (জনগণ) বিভ্রান্ত হবেন না।’
ছাত্রদের অন্দোলন থেকে বিএনপি কোনও অর্জন আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি যৌক্তিক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে। এই আন্দোলনে প্রতি সারাদেশের মানুষের সমর্থন ছিল। তবে যে পদ্ধতিতে সরকার এটাকে দমন করছে তা সার্বজনিনভাবে দৃক্ষিত হয়েছে। বরং নিরিহ ছাত্রদের ওপর এভাবে নির্যাতন চালিয়ে আওয়ামী লীগ আরও গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের সকল শ্রেণি পেশার মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন এমনকি দেশের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীগণ ও পুলিশ কর্মকর্তা পর্যন্ত এই শিশু-কিশোরদের ৯ দফা দাবি আন্দোলন ও কার্যক্রমের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। আমরাও বিএনপি’র পক্ষ থেকে এবং ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে তাদের ন্যায্য ও জরুরি এসব দাবি দাওয়ার প্রতি আমাদের নৈতিক সমর্থন ঘোষণা করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে জনগণের জানমাল রক্ষায় ক্রমাগত ব্যর্থ ও অযোগ্য সরকার প্রথম দিন থেকেই এই আন্দোলনে ষড়যন্ত্র ও উস্কানি আবিষ্কারের অপচেষ্টা চালাতে শুরু করে।’
তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে জনগণের সব ন্যায্য আন্দোলনেও এই সরকার একই কাজ করেছে এবং এই সুযোগে বিরোধীদলের ও মতের নেতাকর্মী ও আন্দোলনে সক্রিয়দের বিরুদ্ধে হায়েনার মত আক্রমন চালিয়েছে। তাদের আক্রমনে নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীরা গুম হয়েছে, আহত হয়েছে, মিথ্যা মামলায় হয়রানী হয়েছে। প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্ব ড. অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেন এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিও তাদের কটূক্তি থেকে রেহাই পাচ্ছেন না।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম প্রমুখ।