বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে নেয়ার দিন সরকার যতটা ভয়ে ছিল এখন তার চেয়েও বেশি ভয়ে আছে যে, তাকে ছেড়ে দিলে কী হয়। সেজন্য জামিনযোগ্য মামলাও তাকে জামিন না দিয়ে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।’
সোমবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন আয়োজিত ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং তার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস ও আন্তর্জাতিক সমাজকর্মী বেগম মেহরুন্নেছা সহ- সকল রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল বলেন, ‘দেশের মধ্যে দুজন হলেন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য ব্যক্তি। একজন খালেদা জিয়া আর একজন শেখ হাসিনা। এখন এর মধ্যে একজন প্রধানমন্ত্রী থেকে নির্বাচন করবেন, আর একজন জেলে থেকে নির্বাচন করবেন- এটাকে তো লেভেল প্লেইং ফিল্ড বলা যায় না। একজন এমপি থেকে নির্বাচন করবে আর আমরা এমপি না থেকে নির্বাচন করবো সেটাও লেভেল প্লেইং ফিল্ড নয়।’
আমরা নির্বাচনের মাধ্যমেই সরকার পরিবর্তন চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন করতে চাই। কিন্তু নির্বাচনের নামে কোনো খেলায় অংশ নিতে চাই না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের পতন চাই এটা কোনো গোপন কথা না। এই সরকারকে সরিয়ে আমরা দেশ শাসন করতে চাই- এটাও গোপন কথা না। সুতরাং আমরা কোনো ষড়যন্ত্রও করি না। আমরা ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে চাই। এর কোনো বিকল্প নেই। সেই আন্দোলন সফল হবে, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনবে।’
সরকারের সমালোচনা বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এত নোংরা অভিযোগ আছে যে- অন্য কেউ হলে বা অন্য কোনো সরকার হলে আগেই পদত্যাগ করতো। কিছুদিন আগে জার্মানির একটি সংস্থা বলেছে স্বৈরাচারী দেশের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। সরকার মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু সারা বিশ্বের সবাই বলে স্বৈরাচার।’
নজরুল বলেন, ‘দেশে যদি আজ সত্যিকারে নির্বাচিত সরকার থাকতো তাহলে জনগণের কাছে জবাবদিহিতা দিতে হতো, এই সরকারের জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা নেই, যা ইচ্ছা তাই করছে। তাদের জবাবদিহিতা করতে হয় না, কারণ বর্তমান সরকার এমন একটি সংসদ গঠন করেছে যে সংসদের বিরোধীদল প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এবং সেই দলের তিনজন সরকারি দলের মন্ত্রী। এরা সারাদিন সরকারি অফিস করে সংসদে গিয়ে বিরোধীদলীয় আসনে বসে। বিরোধীদলের আসনে বসে সরকারি বিল পাস করে। পৃথিবীর কোথাও এমন হাস্যকর সংসদ নেই, যা বাংলাদেশের চলছে। পৃথিবীর কোথাও সংসদে গণতন্ত্র নিয়ে ইয়ার্কি ফাজলামি চলে না, কিন্তু বাংলাদেশে যেটা চলছে। আমরা বলব এটা এক ধরনের ইয়ার্কি ফাজলামি।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে এবং শিক্ষক নেতা সেলিম মিয়ার সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, ডিএল’র সাধারণ সম্পাদক সাইফ উদ্দীন মনি, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, আব্দুল আউয়াল খান, জিনাফের সভাপতি লায়ন মিয়া মোহাম্মাদ আনোয়ার, ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ।