জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পছন্দ অনুযায়ী দ্রুত তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে অনুরোধ জানিয়েছে বিএনপি।
কারাবন্দি অসুস্থ খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দাবি নিয়ে কথা বলতে রবিবার বিকেল ৩টার দিকে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় ৫০ মিনিট বৈঠক করেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
বৈঠক শেষে বেরিয়ে আসার পথে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারারুদ্ধ আছেন। সেখানে দিন দিন তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে। সে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে আসছিলাম। আমরা ইতোপূর্বেও উনার (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) সঙ্গে দেখা করে খালেদা জিয়ার পছন্দ অনুযায়ী বিশেষায়িত কোনও হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থার অনুরোধ জানিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাকে অনুরোধ করেছি যেন খালেদা জিয়াকে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। তিনি যেখানে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। আমরা ইউনাইটেড হাসপাতালের কথা বলেছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন- যারা এ বিষয়ে দায়িত্বে আছেন, সচিব, আইজি প্রিজন ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে আজকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’
এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন জানানোর বিষয়টিও উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল ছাড়াও বৈঠকে অংশ নেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান।
এর আগে শুক্রবার সকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দেবে বিএনপি। একই সঙ্গে তার চিকিৎসার দাবি জানানোর জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা হবে।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছেন।
এর মধ্যে গত সপ্তাহে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলার শুনানি শেষ করতে কারাগারের ভেতরেই আদালত বসিয়ে বেগম জিয়ার বিচারের ব্যবস্থা করেছে সরকার। যেটিকে বিএনপি নেতারা বলছেন- ‘সংবিধান পরিপন্থি’। একইসঙ্গে কারাগারে আদালত বসিয়ে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে জোর করে কাঠগড়ায় আনা হচ্ছে বলেও অভিযোগ দলটির শীর্ষ নেতাদের।
এদিকে কারাগারে আদালত বসানোর পর শুনানির প্রথম দিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বিচারককে বলেন, ‘আমি অসুস্থ। এই অবস্থায় আমার পক্ষে বার বার আদালতে আসা সম্ভব নয়। আমাকে যা খুশি সাজা দিন। যতদিন খুশি সাজা দিতে পারেন। কিন্তু আমি হাত-পা নাড়াতে পারছি না। আদালতে হাজির হওয়ার আমার পক্ষে অসম্ভব।’
তবে কারাগারে আদালত বসানোর পর দিনই এক বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করেই কারাগারে বিশেষ অস্থায়ী আদালত স্থাপন করা হয়েছে। বিএনপি নেত্রীকে বিশেষ সুবিধা দিতেই এই বিশেষ আদালত।’ বিএনপি নেতাদের অভিযোগের জবাবে এসময় তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘সংবিধানের কোথায় লিখা আছে- কারাগারে আদালত বসানো যাবে না?’