বিএনপিকে জাতিসংঘ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তারা নিজেরাই সেখানে গেছে’- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জাতিসংঘ সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ।
মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘আমাদের দলের মহাসচিব জাতিসংঘে আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট গেছেন। নিশ্চয়ই এটা প্রধানমন্ত্রীকে কোনো না কোনো ভাবে আঘাত করেছে, হতাশ করেছে। সেই জন্যই এসব কথা বলেছেন তিনি।’
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আমাদের নেত্রী গত বছরে বলেছেন- নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সেনা মোতায়েন করতে হবে। এখন আমরা অত্যন্ত খুশি ও আশাবাদী বিএনপি ও ২০ দলের বাইরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি আমাদের দাবির সাথে একমত। এটি এখন শুধু না জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে।’
জামায়াত ছাড়া বিএনপিকে জাতীয় ঐক্য করতে হবে যুক্তফ্রন্টের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ কথা আমরা এখনও শুনিনি, আর তারা গতকাল যে দফা দিয়েছেন সেগুলো নিয়ে আমরা এখনও আলোচনা করিনি। আগে সেগুলো নিয়ে দলীয় ফোরামে বসবে, আলোচনা করবো তারপরে এটি নিয়ে মন্তব্য করবো।’
খালেদা জিয়া চিকিৎসা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত চিকিৎসক না রেখে যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে তাতে আমরা হতাশ হয়েছি। এ বোর্ডের পরামর্শে বেগম জিয়ার সুচিকিৎসা হবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন খালেদা জিয়ার চিকিৎসকদের বোর্ডে রাখবেন কিন্তু তাদের রাখা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করে বলেছিলাম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলকে নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করতে। তিনিও আমাদের যে আশ্বাস দিয়েছিলেন কিন্তু সেটি করা হয়নি। সরকারদলীয় চিকিৎসক দিয়ে বেগম জিয়ার সুচিকিৎসা হবে না।’
খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশে কখনও সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না। তাই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই মুক্ত খালেদা জিয়াকে নিয়ে তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি নির্বাচনে যাবে।’
মোশাররফ বলেন, ‘গত পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে কাল পর্যন্ত ৩ হাজারের অধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে ২ লক্ষের অধিক। আর গ্রেফতার করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার নেতাকর্মীকে। সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে সারা দেশকে কারাগারে পরিণত করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মৃত ও দেশে না থাকলেও রাজনৈতিক কারণে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় মৃত ব্যক্তিদের পুলিশ নাশকতা ও গোপন বৈঠক করতে দেখেছেন। মূলত নির্বাচন থেকে বিএনপিকে বাহিরে রাখতেই সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এসব মামলা করছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস-চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।