জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর থেকেই সরকারের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, ‘আজকে তাদের (সরকার) গাত্রদাহ হয়েছে এতো বড় ঐক্যফ্রন্ট কি করে হলো? সে জন্য বিভিন্ন মন্ত্রীরা বিভিন্ন অশালীন ভাষায় মন্তব্য করা শুরু করেছেন এটাই প্রমাণ করে আমরা ঠিক কাজই করেছি। আমরা যে ঐক্যফ্রন্ট করেছি এটা সঠিক কাজ করেছি দেশের সকল মানুষ যে এই ঐক্য চায় সেটাই আজকে প্রমাণিত হয়েছে। সরকার আমাদের যতই সমালোচনা করবে ততই বুঝতে হবে আমরা ঠিক কাজ করেছি, সঠিক কাজ করেছি। আমাদের এই ঐক্য আরও জোরদার হবে, এটির মাধ্যমে আমরা আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করবো।’
শনিবার (২০ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দেয়া ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় প্রত্যাহারের দাবিতে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘আজকে সারা জাতি ঐক্যবদ্ধ। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে গঠন করা হয়েছে এটা সারা জাতি সকল শ্রেণির সকল দলের মানুষের মনের কথা প্রকাশ করেছে। এই কারণে সারা বাংলাদেশে আজকে গ্রামগঞ্জে পর্যন্ত এই ঐক্যের ডাক পৌঁছে গেছে। দেশের মানুষ আজকে এই ঐক্যের মাধ্যমে এই সরকারের পরিবর্তন আনতে বদ্ধপরিকর। এই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট্রের মাধ্যমেই সরকারের পরিবর্তন আনা হবে। তাদেরকে (সরকার) বাধ্য করা হবে সংলাপে বসতে, বাধ্য করা হবে সংসদ বাতিল করে দিতে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে।’
সরকারের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মওদুদ বলেন, ‘আগামী নির্বাচন হবে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন, এককভাবে কোনো নির্বাচন করতে দেয়া হবে না। এবার আর ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন হবে না। এবার আমরা নির্বাচনে গেলে মাঠে যখন মানুষ নামবে তখন আপনারা বুঝতে পারবেন কোন পক্ষে দেশের মানুষ রয়েছেন।’
সিলেটে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পূর্বঘোষিত জনসভায় প্রথমে অনুমতি দিয়ে সেটি আবার বাতিল করা হয়েছে এমন অভিযোগ করে বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘আজকে একটি দল ডাক ঢোল পিটিয়ে (জাতীয় পার্টি) সমাবেশ করছে তাদেরকে কোনো বাধা দেয়া হচ্ছে না, আমরা করলে এর চেয়ে ২০ গুন বেশি লোকের জনসমাগম ঘটতো। সবাইকে অনুমতি দেয়, ওয়ার্কার্স পার্টিকে দেয় আমাদেরকে দেয়না, ২৩ তারিখে সিলেটে আমাদের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভার প্রথমে অনুমতি দিয়ে পরে আবার সেটি প্রত্যাহার করেছে। কারণ, এটা একটি স্বৈরাচারী সরকার, ফ্যাসিবাদী সরকার এরা জনগণকে ভয় পায় এরা আইনের শাসন বিশ্বাস করে না।’
২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় প্রতিহিংসামূলকভাবে তারেক রহমানকে সাজা দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে মওদুদ বলেন, ‘সম্পূর্ণ আইনবর্হিভূতভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে। আমরা এই রায়ের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এই রায় একটি ফরমায়েসী রায় এই রায় দেশের মানুষ মানে নাই এবং মানতে পারে না। কারন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনো স্বাক্ষীর জবানবন্দি তারা দিতে পারে নাই।’
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান যেদিন দেশে ফিরে আসবেন তিনি আত্নসমর্পণ করে হাইকোর্টে আপিল করবেন এবং তিনি জামিন নিবেন সেই সাথে প্রমাণ করবেন তার বিরুদ্ধে এটি একটি অসত্য রায়, এই রায় কার্যকর হবে না। সেই আপিলে অবশ্যই তিনি সফল হবেন এবং খালাস পাবেন এই বিশ্বাস আমরা রাখি।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে মহিলা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি নূরজাহান ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ও সহ-সভাপতি জেবা খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।