আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘শেষ কথা ক্ষমতায় জোর করে থাকা যাবে না।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে কৃষক দলের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ক্ষমতায় জোর করে থাকা যাবে না। নির্বাচনে গিয়েছি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা পরিবর্তনের জন্য। আপনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশ দিয়ে হামলা করিয়েছেন, যেখানে সারা বিশ্ব, সারাদেশের জনগণ ও সাংবাদিকরা নজর রেখেছে। সেখানে গায়ের জোরে বিএনপি নেতাকর্মীদের মারধর করবে, আবার মামলাও দিবেন?’
বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিএনপি আয়োজিত মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্যে করে দুদু বলেন, ‘এগুলো থেকে একটু নিভৃতি হন, বিরত থাকেন, একটু হুশে আসেন। আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্র ও শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য। আপনি যদি আমাদেরকে এ পথ থেকে ফিরিয়ে দেন, তাহলে এটা ভালো কোনো কাজ বয়ে আনবে না।’
বিএনপির এই ভাইস-চেয়ারম্যান বলেন, ‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন যে এতো ছোট, তার হৃদয় যে এতো ছোট এক বেগম খালেদা জিয়াকে সহ্য করতে পারছেন না। তাঁর (খালেদা জিয়া) অপরাধ তিনি দুর্নীতি-লুটপাটের বিরোধিতা করেন। তাঁর অপরাধ মাত্র দুই কোটি টাকার একটি মামলা, যা এখন ব্যাংকে ছয় কোটি টাকার হয়েছে। যিনি সৎ অহংকারমুক্ত স্বাধীনতার ঘোষণাকারীর সহধর্মিনী। তাকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে।’
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘শুধু প্রধানমন্ত্রীত্বের জন্য মুক্তিযুদ্ধকে পাঠ্যপুস্তকে ধ্বংস করা হচ্ছে। পাঠ্যপুস্তকে যদি কারো নাম রাখতে হয়, তবে নাম হবে মওলানা ভাসানীর। কিন্তু তার নাম না দিয়ে, আরও যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে তাদের নাম না দিয়ে শুধু একজনের নাম দেয়া হচ্ছে। এক নেতার এক দেশ।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের উদাহরণ দিয়ে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘তারেক রহমান তো ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য না। তিনি দেশে ফিরে আসতে চাইছে, অথচ কেউ কেউ বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বাতিল করে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য হয়েছে। তার জন্য আওয়ামী লীগ উল্লাস করে। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বাতিল করা মানে শেখ মুজিবরকে অপমান করা, এটা কি প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পেরেছেন? তার পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশ থাকছেন না, এটা বাংলাদেশকে অপমান করা হচ্ছে, এটা কি প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পারছেন?’
এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘যে কারণেই যেই ঘটনা ঘটুক না কেন, আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধ হলে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারব এবং মওলানা ভাসানীকে প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারবো।’
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-তথ্য বিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য তকদির হোসেন মো. জসিম, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ মাইনুল হোসেন, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।