জনগণের আন্দোলন মালিকানা ফিরে পাওয়ার। আজ ১৭ কোটি মানুষের আন্দোলন গণতন্ত্র , সুশাসন, নিরাপত্তা, ভোটাধিকার তথা ন্যায্য অধিকার ফিরে পাওয়ার।
যেই আন্দোলন করেছিলাম আমরা ৭১ য়ে। যেটা ছিলো জনতন্ত্রের অধিকার পূর্নরুদ্ধার করা।
আজ বেলা সাড়ে দশ টায় মতিঝিলস্থ পূর্বাণী হোটেলের কনফারেন্স হলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষনামূলক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ড. কামাল হোসেন ।
ড. কামাল বলেন, ‘জনগণের রুখে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে এক গণ-অভ্যুত্থানের দিন হবে ৩০ ডিসেম্বর। ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার জনগণের ইশতেহার। জনগণের কল্যাণে, জনমতের ভিত্তিতে ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার তৈরি করা হয়েছে- যাতে সাধারণ মানুষের মতামত গ্রহণের ধারা অব্যাহত থাকবে। আমি পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের অনুরোধ করব, আপনারা আর বেআইনি আদেশ মানবেন না, অন্যায়ভাবে বিরোধী মতের লোকজনকে গ্রেফতার হয়রানি করবেন না। ৩০ ডিসেম্বর জনগণ ভোট দিতে না পারলে দেশের অবস্থা ভয়াবহতার দিকে যেতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ এক যুগ পর বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল, কিন্তু এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য হবে কি না সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের নানা রকম পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ আমাদেরকে শঙ্কিত করেছে।’
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে যে প্রহসনটি হয়েছিল সেটা সংবিধানে বর্ণিত জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের বাধ্যবাদকতার সাথে সাংঘর্ষিক। এই নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণ এই রাষ্ট্রের মালিকানা হারিয়েছে। জনগণ যখন রাষ্ট্রের মালিক থাকে না তখন রাষ্ট্রের মালিক হয়ে পড়ে কায়েমী স্বার্থবাদী দেশি-বিদেশি নানা গোষ্ঠী এর মাশুল দিতে হয়েছে এ দেশের মানুষকে এই রাষ্ট্রটি মানুষের জন্য একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে উঠবে কি না, সেটা নিশ্চিত হবে- যদি আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে এই রাষ্ট্র জনগণের হাতে আবার ফেরত যায়, জনগণ তার মালিকানা ফিরে পায় জনগণের সৰ্বাঙ্গীন বল্যাণ তখনই নিশ্চিত হতে পারে যখন সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই রাষ্টের মালিক জনগণ হবে’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সাম্প্রতিক নিরাপদ সড়ক আন্দেলেনের শিক্ষার্থীদের মতো আমরাও বলতে চাই, এই রাষ্ট্রের মেরামত প্রয়োজন আগামী সাধারণ নির্বাচনের দিন ৩০ ডিসেম্বর। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিশ্বাস করে, সেদিন দলে দলে, জনে জনে মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাবে, ভোট দেবে, তারা ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করে ভোটের অনিয়ম রুখবে, ভোট শেষ হবার পর নিজেদের ভোটে প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়া দেখে বাড়ি ফিরবে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে এক গণ-অভ্যুত্থানের দিন হবে ৩০ ডিসেম্বর।’
ড. কামাল আরও বলেন, ‘আজকের এই দিনটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই জন্য যে, আজ আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করছি এটা জনগণের ইশতেহার৷ জনগণের কল্যাণে, জনমতের ভিত্তিতে এটা তৈরি করা হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের মতামত গ্রহণের ধারা অব্যাহত থাকবে বাংলাদেশ হবে গুম, খুন, সমাস ও দুর্নীতিমুক্ত শান্তি-সুখের বাংলাদেশ’
তিনি বলেন, আমরা এখনও আশাবাদী, আশা করছি, পরিশেষে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলার জনগণ নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে পুনরুদ্ধার হবে নিবিড় গণতন্ত্র।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।