বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্ট আইএসআইয়ের প্রেসক্রিপশনে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান।
মঙ্গলবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন তিনি।
আব্দুর রহমান বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্ট এর মিথ্যাচারের ভয়াবহতা এতই প্রকট হয়ে উঠেছে যে, তাদের মনগড়া, বিকৃত, বাস্তবতা বিবর্জিত কথা রাজনীতির ময়দান ছেড়ে সেনাবাহিনী পর্যন্ত গড়িয়েছে।’
‘বিএনপি-জামায়াত পরাজিত পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রেসক্রিপশনে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছে। কিছুদিন আগেও আপনারা দেখেছেন ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ড. জাফরুল্লাহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও সেনাবাহিনীর প্রধানকে নিয়ে কিভাবে নির্লজ্জ, মিথ্যাচার, অপপ্রচার করেছে। পরে তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতিও দিয়েছেন। আর এখন সেনাবাহিনীর নামে বিভিন্ন ভুয়া ওয়েবসাইট ও ফেসবুক আইডি খুলে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে তারা।’ বলেন, আব্দুর রহমান।
‘সেনাবাহিনীকে নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের এই ষড়যন্ত্র নতুন নয় এমন দাবি করে আব্দুর রহমান বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মিথ্যা ক্যু’র নামে তথাকথিত সামরিক ট্রাইব্যুনালে প্রহসনের বিচারে শত শত মুক্তিযোদ্ধা, সেনা কর্মকর্তা, হাজার হাজার সেনা সদস্যকে হত্যা করেছেন। প্রতিদিন নাস্তার টেবিলে বসে অবৈধ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শত শত সেনা সদস্যের ফাঁসির রায়ে সই করতেন। বিএনপি জামায়াত অশুভ জোট সব সময় আমাদের আত্মমর্যাদার অনন্য স্মারক সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থেকেছে।’
বিবেকের আয়নার সামনে দাঁড়ালে ড. কামাল হোসেন নিজের পাশে ইয়াহিয়া খানকে দেখতে পারবেন এমন মন্তব্য করে আব্দুর রহমান বলেন, ড. কামাল হোসেন এখন পাকিস্তানি ভাবধারার অনুসারীদের অভিভাবক এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ ১৫ আগস্ট, জাতীয় চার নেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী মেজর খালেদ মোশাররফ, কর্নেল তাহের, শাফায়েত জামিলসহ শত শত সেনা কর্মকর্তা হত্যাকারী, ২১ আগস্টের হামলাকারী, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী ও তাদের পরিবারের পৃষ্ঠপোষক।
বিএনপি-জামায়াত ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা নিজেদের লোক দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় হামলা ও সহিংসতা চালাচ্ছে এমন অভিযোগ করে রহমান বলেন, বিএনপি-জামায়াত ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা নিজেদের লোক দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় হামলা ও সহিংসতা চালিয়ে আওয়ামী লীগ মহাজোট প্রার্থীর নির্বাচনি অফিসে হামলা, অগ্নিসংযোগ এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। যা তাদের নেতাদের ফাঁস হওয়া ফোনালাপ থেকে প্রমাণিত হয়েছে। নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিতের আশঙ্কা থেকে তারা ঢাকাসহ সারা দেশে বড় ধরনের দেশে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করেছে বলে আমরা জেনেছি। দেশবাসীকে বিএনপি-জামায়াতের এ ধরনের অপতৎপরতা সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আপনারা অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দিন।
আওয়ামীলীগে ২৩ জন যুদ্ধাপরাধী রয়েছে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আব্দুর রহমান বলেন, এখন প্রশ্ন হল যে, আওয়ামী লীগের ভেতরে যুদ্ধাপরাধী রয়েছে- এটা শুধু বলার জন্য বলা। এটা এক জিনিস আর যথার্থ অর্থেই আওয়ামী লীগের মধ্যে যুদ্ধাপরাধী কাউকে খুঁজে পাওয়া আরেক জিনিস। এই ধরনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, বানোয়াট, মিথ্যাচার করা জাতির জন্য লজ্জাস্কর এবং এটা আমাদের কাছে হাস্যকর ব্যাপার।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, আহমদ হোসেন।