ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের তারিখ যতোই ঘনিয়ে আসছে ততোই সব মহলেই চলছে জোর আলোচনা। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের সময় নিকটবর্তী হওয়ায় অনানুষ্ঠানিক প্রচারণায় নেমেছে ছাত্রলীগসহ অন্য সংগঠনগুলোর নেতারা। দীর্ঘ দিন পর ডাকসু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায় ভিপি-জিএস পদে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে মরিয়া তারা।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ও সময় হচ্ছে ২৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।
মূলত মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের পর থেকে প্রচারণায় সক্রিয় হবেন পদপ্রত্যাশীরা। নির্দিষ্ট সময়ের আগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিচয়ের মাধ্যমে প্রচারণায় এগিয়ে থাকতে চাইছে সংগঠনগুলো।
ক্যাম্পাসের সব হলে ছাত্রলীগের অবস্থান সুদৃঢ় হওয়ায় প্রচারণায় এগিয়ে থাকবে তারা। বয়সের ফ্রেমে শীর্ষ নেতাদের প্রার্থিতা আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলেও সর্বশেষ অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় বয়সসীমা ৩০ ও সান্ধ্যকালীন কোর্সের শিক্ষার্থীদের নির্বাচনের সুযোগে দেওয়াতে পাল্টে যায় প্যানেলের হিসাব-নিকাশ।
যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসও আলোচনায় যুক্ত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ ছাত্রদের হলে ব্যাট-বল দিয়ে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাতে হলের অতিথি কক্ষে সাক্ষাৎ দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনও হলে হলে গিয়ে গণরুমের শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের জন্য বিভিন্ন প্রস্তাবনা দিয়েছি। সেই কর্মসূচির ভিত্তিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের কার্যক্রম চলছে।
অন্যদিকে ছাত্রদল প্রকাশ্যে কোনো ধরনের প্রচারণা চালানোর সুযোগ না পেলেও মধুর ক্যান্টিনে এসেছে। সেখানে তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে অবস্থান করে খোঁজ খবর নেওয়ার চেষ্টা করছে তারা। বয়সসীমা ও ছাত্রত্বের কারণে ছাত্রদলের শীর্ষ নেতাদের কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারছে না। তবে প্যানেল নিয়ে চিন্তা-ভাবনার আগে ভোট কেন্দ্র একাডেমিক ভবনে ও ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের দাবিতে অনঢ় রয়েছে সংগঠনটি। নেতাকর্মীদের মধ্যে কারা কারা প্রার্থী হওয়ার শর্ত পূরণ করতে পারছে সে বিষয়টি নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি নতুন করে কর্মসূচি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে তারা।
সংগঠনটির জুনিয়র লেভেলের নেতাকর্মীদের মধ্যে হল সংসদে প্রার্থী হতে ইচ্ছুকরা যোগাযোগ করা শুরু করছে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নাছির উদ্দিন বলেন, আমাদের মূল দাবি সহাবস্থান এখনো মানা হয়নি। শুধুমাত্র মধুর ক্যান্টিনে সাময়িক সহাবস্থান নিশ্চিত হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ আছে।
অন্যদিকে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেতাকর্মীদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়, গণস্বাক্ষর, লিফলেট বিতরণ করতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ বলেন, আমরা নরমাল প্রচারণা শুরু করেছি। নির্বাচনে উদ্বুদ্ধ করার জন্য শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে কথা বলছি। মূল প্রচারণা শুরু করব প্যানেল নিশ্চিত হওয়ার পর।