চকবাজারের চুরিহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে অগ্নিদগ্ধদের দেখতে এসে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বিষয়ে মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘আমরা ফায়ার সার্ভিসের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে আপডেট করছিলাম। আমি যেটুকু শুনেছি ঢাকা মেডিকেলের মর্গে ৬৭ মৃতদেহ আছে। ওখানে ধ্বংসাবশেষের নিচে যদি আর কোনো মরদেহ না থাকে তাহলে আমরা বলতে পারি মৃতের সংখ্যা ৬৭ জন। তবে আমি এটা নিশ্চয়তা দিতে পারছি না।’
এখন পর্যন্ত ৩৭ জনকে চিহ্নিত করা গেছে, তার মধ্যে ১২ জনকে তাদের আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান আইজিপি। এসময় নিখোঁজদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘৬৭ জনের মধ্যে ৩৭ জন শনাক্ত হয়েছে। সুতরাং বাকিরা নিখোঁজ। শনাক্ত হওয়ার পরেই আপনি বলতে পারবেন আমি আমার আত্মীয়কে পেলাম। যতক্ষণ পর্যন্ত শনাক্ত না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি নিখোঁজ।’
জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ যে কয়টি মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হবে বা হয়েছে, সে কয়টিকে তাদের আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা। বিশেষ করে অগ্নিকাণ্ডে অগ্নিদগ্ধ মরদেহ শনাক্তকরণে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ থাকে। কারণ এ সময় মুখের বা দেহের আকৃতি চেনা যায় না। পরিধেয় কোনো কিছু চেনা যায় না।’
মরদেহ ডিএনএ টেস্ট প্রসঙ্গে পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেন, ‘যেটুকু শুনেছি যারা মারা গেছেন তারা অত্যন্ত ভয়ঙ্করভাবে পুড়ে গেছেন। তাদের এখন ডিএনএ টেস্ট করতে হবে। ডিএনএ টেস্ট করে নিকট আত্মীয়দের সঙ্গে ডিএনএ ম্যাচিং করতে হবে। যদি তাদের নিকটাত্মীয়দের শনাক্ত করা যায়, সেক্ষেত্রে নিখোঁজ মরদেহগুলো আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা যাবে।’
পুরান ঢাকার অলিগলিতে অবৈধ গোডাউনগুলো স্থানান্তর করতে সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হয়েছিল জানিয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, ‘নিমতলার ঘটনার পরে সবাই মিলে আমরা চেষ্টা করেছিলাম পুরান ঢাকার অলিগলিতে অবৈধ যেসব গোডাউন আছে সেগুলো স্থানান্তর করার। সরকারের পক্ষ থেকে প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছিল এবং আমার জানা মতে কেরানীগঞ্জের ওইদিকে জমি নির্দিষ্ট করে দিয়ে এখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল।’
এখানে অনেকেই সম্পৃক্ত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে সিটি কর্পোরেশন আছে, যারা ব্যবসা করার লাইসেন্স দেয় তাদের বিষয় আছে। বিস্ফোরক অধিদফতেরর বিষয় আছে। পরিবেশ অধিদফতরের বিষয় আছে। পুলিশ, আইন-শৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষের বিষয় আছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পুরান ঢাকার এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া উচিত।