প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম না সরানো দুঃখজনক। এ কাজে তিনি সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের দেখতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ঘনবসতির এলাকায় যেন আর কেমিক্যাল না থাকে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী দগ্ধ ও আহতদের খোঁজ-খবর নেন এবং রোগী ও তার আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়া ডাক্তারদের সঙ্গেও রোগীদের অবস্থা নিয়ে কথা বলেন সরকারপ্রধান।
অফিস খোলার পর পার্লামেন্টে আলোচনা করে চকবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ঢাকা শহরের কোথাও যদি এ ধরনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয় তাহলে উৎসুক জনতা হওয়ার পরিবর্তে এক বালতি পানি অথবা কিছু বালু নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে আগুন নেভাতে সহযোগিতা করতে পারবেন।
বার্ন ইউনিট পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে অনেক আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়েছি। আশা করি, যারা চিকিৎসাধীন আছেন তাদের চিকিৎসার কোনো অসুবিধা হবে না। যে ঘটনা ঘটেছে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। তাৎক্ষণিকভাবে যতটা সম্ভব আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহযোগিতা দিয়েছি।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে অনেক খাল ও পুকুর ছিল। এগুলো ভরাট করার কারণে যে কোনো স্থানে আগুন লাগলে পানি পাওয়াটাও বড় সংকট হয়ে দাঁড়ায়।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে উদ্ধারকর্মীদের উদ্ধার কাজ না করতে দিয়ে তাকে ঠেকিয়ে রেখে প্রশ্নের পর প্রশ্ন করাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।
এর আগে, এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় চকবাজারে আগুনে দগ্ধ ও আহতদের খোঁজ-খবর নিতে ঢাকা ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন-স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক স্বপন, প্রতিমন্ত্রী ড. মুরাদ হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, এমপি হাজী মো. সেলিম, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. সামন্তলাল সেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. আবুল কালাম প্রমূখ।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। সে দিন সারা রাত জেগে থেকে প্রতি মুহূর্তের খোঁজ-খবর নেন সরকার প্রধান।
পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশও দেন তিনি। এছাড়া পরবর্তীতে নিহতদের পরিবারকে সহায়তা এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে ২০১০ সালে নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জনের মৃত্যু হয়।