সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে জীবনের দ্বিতীয় ইনিংসে কী করবেন, সেকথা নিজেই জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দীর্ঘ দুই মাস ১৬ দিন পর আজ শনিবার প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে এ তথ্য জানান তিনি। মৃত্যুর খুব কাছ থেকে ফিরে আসায় বর্তমান জীবনকে দ্বিতীয় ইনিংস হিসেবেই উল্লেখ করেছেন সেতুমন্ত্রী।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে দপ্তরে যান সেতুমন্ত্রী। এ সময় সচিবসহ কর্মকর্তারা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন। কার্যালয়ে গিয়ে প্রথমেই রুটিন ফাইল ওয়ার্ক করেন ওবায়দুল কাদের। পরে পৌনে ১১টায় নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চলমান উন্নয়ন প্রকল্প বিষয়ক সভায় যোগ দেন তিনি।
পরে সাংবাদিকদের ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি তো মরেই যেতাম। বেঁচে আছি। প্রথম ইনিংস শেষ করেছি। ইনশাল্লাহ আমি এবার দ্বিতীয় ইনিংস খেলব।’
‘দ্বিতীয় ইনিংস’র ব্যাখ্যায় কাদের বলেন, ‘মেগা প্রজেক্টগুলোর কাজ শেষ করা, যানজট নিরসন, সড়কে শৃংখলা ফিরিয়ে আনা, দ্বিতীয় ইনিংসে এগুলো হবে বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করব ইনশাআল্লাহ। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারব।’
এবারের ঈদযাত্রায় সড়ক-মহাসড়কে কোনো দুর্ভোগ হবে না জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এবার ঈদ যাত্রীদের জন্য স্বস্তিদায়ক হবে। ২৫ মে গাজীপুর কোনাবাড়ী ও চন্দ্রায় দুটি উড়ালসড়ক ও চারটি আন্ডারপাস উদ্বোধন করা হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম পথে দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় গোমতী সেতু উদ্বোধন হবে। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তা উদ্বোধন করবেন। আশা করা যায়, এবারের ঈদে আর যানজট হবে না।’
আওয়ামী লীগের কাউন্সিল নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান দলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘তিন বছর পর পর আমাদের কাউন্সিল হয়। সেটা এবারও যথাসময়ে হবে। সেই টার্গেট নিয়েই আমাদের কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে।’ এ সময় আগামীকাল দলীয় কার্যালয়ে যাবেন এবং সেতু ভবনে অফিস করবেন বলেও জানান সেতুমন্ত্রী।
অসুস্থতা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন সুস্থ আছি। তবে শারীরিক দুর্বলতাও আছে। এক–দেড় মাস আগের মতো ছোটাছুটি করা যাবে না। দুই মাস পরপর আবার চিকিৎসকের কাছে ফলোআপ করাতে সিঙ্গাপুর যেতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মার্চ ভোরে ঢাকার নিজ বাসায় শ্বাসকষ্ট শুরু হলে ওবায়দুল কাদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়।
এরপর ভারতের বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেঠীর পরামর্শে ৪ মার্চ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ২০ মার্চ ওবায়দুল কাদেরের বাইপাস সার্জারি হয়।
কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর গত ৫ এপ্রিল মাউন্ট এলিজাবেথ থেকে ছাড়পত্র পান ওবায়দুল কাদের। তবে ওই হাসপাতালের কাছেই ভাড়া বাসায় থেকে যান তিনি। সেখানে থেকে তিনি ফলোআপ চিকিৎসায় ছিলেন। গত বুধবার দেশে ফেরেন সেতুমন্ত্রী।