জাতীয় বাজেটের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘আজকে সুবিধাবাদী গোষ্ঠির জন্য ‘অস্বাভাবিক সরকার অস্বাভাবিক একটা বাজেট করেছে। আধিপত্যবাদ এবং সম্প্রসারণবাদ বাংলাদেশের বাজার দখলের জন্য মরিয়া।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় সংসদে যেসব ঋণখেলাপিদের তালিকা দেয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার কী ধরনের ব্যবস্থা নেবে তা দেখতে চায় জাতি।’
রবিবার (২৩ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে মাওলানা আকরাম খা হলে ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট আয়োজিত ‘২৩ জুন পলাশী ষড়যন্ত্রের প্রেক্ষাপটে আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এত বড় ব্যবসায়ীকে কখনও (দশ জন ধনীর মধ্যে একজন) অর্থমন্ত্রী বানানো হয়নি উল্লেখ করে মোশাররফ বলেন, ‘এই অর্থমন্ত্রী সুবিধাবাদীদের জন্য বাজেট দিয়েছেন। অপরদিকে মধ্যবিত্তদের ওপরে চাপ বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর ভ্যাটের প্রভাব বাড়ানো হয়েছে। দেশে এখন সব শ্রেণির মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। সেই মোবাইল ফোনে কর বৃদ্ধি করা হয়েছে। ১০০ টাকার মধ্যে ২৭ টাকা চলে যাবে। এই একটি উদাহরণেই বোঝা যায় যে এই বাজেট সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীদের জন্য করা হয়েছে। যারা মুদ্রা পাচার করে, ঋণখেলাপি তারাই এই বাজেট থেকে সুবিধা পাবে।’
উন্নয়নের গণতন্ত্রের নামে সরকার মেগা প্রজেক্ট করে জনগণের পকেট থেকে টাকা নিচ্ছে দাবি করে ড. মোশাররফ বলেন, ‘গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির বিল বাড়িয়ে ভ্যাট সম্প্রসারণ করে গরিব মানুষের কাছে থেকে টাকা আদায় করছে। আর এর সুবিধা নিচ্ছে সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীরা।’
কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গত ৫ বছরে কারা কালো টাকা কামিয়েছে- আওয়ামী লীগের নেতারা, আওয়ামীপন্থি ব্যবসায়ীরা। তাদের সুবিধা দেয়ার জন্যই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এতেই বোঝা যায় এই সরকার হচ্ছে তাদের সরকার, যাদের স্বার্থে এই বাজেট দেয়া হয়েছে।’
ব্যাংকের দলীয়করণের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতাদের সেখানে না বসালে ঋণখেলাপি হওয়ার কথা না- মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ঋণখেলাপিদের তালিকা সংসদে দেয়া হয়েছে। এখন আমরা দেখতে চাই সরকার তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়। জনগণের আমানত বিদেশে পাচার করে ব্যাংকগুলোকে খালি করে যারা এই কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার কী করে সেটা দেখতে চাই।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সেলিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, তাঁতী দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ড.কাজী মনিরুজ্জামান মনির ও কৃষকদলের সদস্য এম জাহাঙ্গীর প্রমুখ বক্তব্য দেন।