রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ফিটনেসবিহীন গাড়ি এবং চালকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে লাইসেন্স নিয়ে নবায়ন না করা গাড়ি ও চালকের বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছেন আদালত।
সোমবার ফিটনেসবিহীন গাড়িসংক্রান্ত বিআরটিএর প্রতিবেদন উপস্থাপন করার পর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বিআরটিএর চেয়ারম্যান ও বিআরটিএর সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালককে এ আদেশ পালন করতে বলা হয়েছে।
আদালতে জমা দেয়া বিআরটিএর ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারা দেশে লাইসেন্সধারী ফিটনেসবিহীন চার লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৯ গাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকা শহরেই রয়েছে এক লাখ ৬৮ হাজার ৩০৮টি।
এর আগে সকালে আদালতের নির্দেশে হাইকোর্টে হাজির হন বিআরটিএর সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক মাহবুব-ই-রাব্বানী।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিনউদ্দিন মানিক। বিআরটিএর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মঈন ফিরোজী ও রাফিউল ইসলাম।
গত ২৩ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে ফিটনেসহীন গাড়ি নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন। ওই দিন আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলের বিবাদীরা হচ্ছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের আইজি, চেয়ারম্যান বিআরটিএ, ঢাকার ডিসি ট্রাফিক (উত্তর ও দক্ষিণ), বিআরটিএ পরিচালক (রোড নিরাপত্তা) ও দুদক চেয়ারম্যান।
রুলে ফিটনেসবিহীন গাড়ি, রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়ি ও ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর বিষয়ে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, পাশাপাশি সংবিধানের ৩২ ধারার আলোকে জীবন বাঁচার অধিকার বাস্তবায়নে কেন মোটর ভেহিক্যাল আইন, ১৯৮৩-এর বিধানগুলো সঠিকভাবে পালনের জন্য কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন।
একই সঙ্গে বিআরটিএর চেয়ারম্যান, পুলিশ মহাপরিদর্শক, ঢাকার ট্রাফিক পুলিশের উত্তর ও দক্ষিণের ডিসি এবং বিআরটিএর সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক মাহবুব-ই-রাব্বানীকে এ তথ্য জানাতে নির্দেশ দেয়া হয়। ওই দিন বিআরটিএর সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালককে আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়।
ওই আদেশ অনুযায়ী, সোমবার বিআরটিএর পক্ষ থেকে একটি ও পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। একই সঙ্গে বিআরটিএর পরিচালক হাজির হন।
আদেশের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিনউদ্দিন মানিক জানান, ঢাকাসহ সারা দেশে লাইসেন্স নিয়ে ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়ি এবং লাইসেন্স নিয়ে নবায়ন না করা চালকের বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে সারা দেশে থাকা লাইসেন্সধারী ফিটনেসহীন চার লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৯ গাড়ি এবং লাইসেন্স নিয়ে নবায়ন না করা চালকের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে বিআরটিএ কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তাও এক মাসের মধ্যে জানাতে হবে।