বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর নিয়ে না খেলতে ক্ষমতাসীনদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক দল আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। ‘বিএনপি চেয়ারপারসন ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি’ উপলক্ষে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
সংসদে ভবনের ডিজাইনে কোন কবর নেই, তাই জিয়াউর রহমানের কবর সরিয়ে দিতে হবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে নজরুল ইসলাম বলেন, পাকিস্তানের পাশ করা ডিজাইন আপনার এতো পছন্দ হয়ে গেলো? সেই পাশ করা ডিজাইন অনুযায়ী কাজ করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমানের কবর সরিয়ে দিতে হবে! পাকিস্তানকে তো আপনাদের এতো ভালোবাসার কথা না?
সুইস ব্যাংকে অর্থপাচার বিষয়ে তিনি বলেন, আপনারা যে বাজেট দিয়েছেন তা শ্রমিক বান্ধব নয়, কৃষক বান্ধব নয় এবং ব্যবসা বান্ধবও নয়। এই বাজেট ব্যবসায়ী বান্ধব। এতে যারা ব্যবসা করে তাদের মুনাফা বৃদ্ধি পাবে। কোনো কাজে আসবে না। কারণ এই বাজেট বিদেশে পাচার হয়ে যায়। বিএনপির সুইস ব্যাংকে রাখার অর্থ নেই। সব কিছু লুটপাট করার জন্যই ব্যবসায়ী বান্ধব বাজেট দিয়েছেন আপনারা, যাতে শ্রমিকের কোনো কল্যাণ নেই, কৃষকদের কল্যাণ নেই।
নজরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- গত নির্বাচনে বিএনপি মনোনয়ন বানিজ্য করেছে। সেই টাকা সুইস ব্যাংকে জমা হয়েছে কিনা তা তিনি দেখবেন। প্রধানমন্ত্রী আপনি সাধারণ জিনিস ভুলে যান। আপনি বলবেন, আর মানুষ সেটা বিশ্বাস করবে? কিন্তু এই অর্থ বছরে কত টাকা পাচার হয়েছে সেই রিপোর্ট তো এখনো প্রকাশ হয়নি। আর যে টাকা পাচারের রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে সেটা কোন মনোনয়ন বানিজ্যের টাকা? সেই রিপোর্ট আপনারা প্রকাশ করছেন না কেনো?
তিনি বলেন, গত ১০ বছরে ৪০ হাজার কোটিরও বেশি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এসব কাদের টাকা? জনগণ ও বাংলাদেশের টাকা। এই টাকা কারা পাচার করলো? সে বিষয়ে তো আপনি কোনো খোঁজ নিচ্ছেন না। আর আপনি ভয়ঙ্কর একটি রিপোর্ট দিলেন! আরে ৩০০ আসনে মনোনয়ন বানিজ্য করলে কত টাকা পাওয়া যেতে পারে?
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, বগুড়ার-৬ (সদর) আসনে উপনির্বাচনের জয় নিয়ে আমরা অবাক হয়নি। কারণ ওই আসনে বিএনপির যে কেউ নির্বাচন করেছে সেই নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু আজকে পত্রিকায় দেখলাম, যেখানে মোট ভোটের অর্ধেক ভোট পড়েনি, সেখানে কোনো কোনো কেন্দ্রে ৯৭-৯৮ শতাংশ ভোট দেখানো হয়েছে। এমনকি ১০০ শতাংশও ভোট দেখানো হয়েছে! তাই যে যন্ত্র দিয়ে এটা যোগ-বিয়োগ করা হয়েছে, সেই যন্ত্র দিয়ে কাজ হবে না।
নেতাকর্মীদের গ্রেফতার নিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে আন্দোলন বন্ধ করা যায় না তা আপনারাই তো ভালো জানেন। ৬ দফার পরে বহু নেতা গ্রেফতার হয়। কিন্তু ৭০ এর নির্বাচনে কি আপনাদের হারাতে পেরেছে?
আজও একটি নির্বাচন দিয়ে দেখুন না, কিভাবে আপনারা বিএনপির কাছে হেরে যান দেখবেন।
শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান সরোয়ার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।