ছাত্রদলের আসন্ন কাউন্সিলে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগ্রহী নেতাদের হাতে মনোনয়নপত্র তুলে দিলেন সংগঠনটির সাবেক নেতারা।
রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুর ১২ টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো মনোয়ন ফরম বিতরণ শুরু হয়।
ফরম বিতরণ শুরুর আগে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘যে দেশে নির্বাচন বলে কিছু নেই, যে দেশে মানুষের অধিকার বলে কিছু নেই, যে দেশে একাত্তর সালে অর্জিত অধিকার ভূ-লুণ্ঠিত, যে দেশের সব চেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী মিথ্যা মামলায়, অবিচারে কারাগারে বন্দি, যে দেশে আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান স্বাচ্ছন্দে থাকতে পারেন নাই, যে দেশে বিএনপির হাজার, হাজার নেতাকর্মী হয় জেলে, না হয় গুমের শিকার, যে দেশের কৃষক ধানে আগুন দেয়, যে দেশে কোরবানির চামড়া রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়, যে দেশে নারীরা সম্ভ্রম রক্ষা করতে পারে না, সেই দেশে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য উদ্যোগী হয়েছে— এটা ঐতিহাসিক ঘটনা।’
ছাত্রদলের এ কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে অতীতের মতো ভবিষ্যতেও স্বৈরতন্ত্র পতনে দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘সবকিছুর লক্ষ্য হচ্ছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সবকিছুর লক্ষ্য হচ্ছে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা, সবকিছুর লক্ষ্য দেশে সাংবিধানিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা। এ লক্ষ্য নিয়ে যারা আজ ছাত্রদলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তাদেরকে অভিনন্দন জানাই।’
ছাত্রদলের আরেক সাবেক সভাপতি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ছাত্রদল জন্মলগ্ন থেকেই কাউন্সিল এবং সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে এসেছে। এ দেশে অনেকবার গণতন্ত্রের পথচলা বাধাগ্রস্ত হয়েছে, সামরিক শাসন এসেছে, এর মধ্যেও ছাত্রদল তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে। হয়ত যথাসময়ে বা নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে কাউন্সিল করা যায়নি। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই অনন্য দায়িত্ব পালন করেছে ছাত্রদল। বৃহত্তর ছাত্রসংগঠন হিসেবে নব্বয়ের গণআন্দোলনে অনমনীয় নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্রদল।’
তিনি বলেন, ‘কাউন্সিল মানেই হচ্ছে তর্ক-বিতর্ক। এর মধ্যে দিয়েই কাউন্সিলরা ভোট দেবেন। যারা অংশগ্রহণ করছেন তাদের কথা, তাদের মনন, তাদের বিভিন্ন দিক— সব কিছু মিলে ভোটাররা নির্ধারণ করবেন, তাদের উপযুক্ত নেতা কে হবেন। এটা আমরা আগামী ১৪ সেপ্টম্বর দেখতে পাব।’
ছাত্রদলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ডাকসুর সাবেক জিএস বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, ‘আমরা দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র চর্চা অব্যাহত রাখতে চাই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আগামী দিনের নেতা নির্বাচন করতে চাই। এরাই আগামীতে গণতন্ত্রের ভ্যানগার্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে শামসুজ্জামান দুদু, রুহুল কবির রিজভী ও খায়রুল কবির খোকন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়ন ফরম তুলে দেন।
সাবেক নেতাদের হাত থেকে সভাপতির পদের জন্য মনোনয়ন ফরম গ্রহণ করেন সাজ্জাদ হোসেন রুবেল, আল আমীন কাউসার, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, রিয়াদ মো. তানভীর রেজা রুবেল, আব্বাস আলী, তানভীর আহমেদ খান, সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য মনোনয়ন ফরম গ্রহণ করেন নাঈম হোসাইন, ফজল হক নিরব, তানজীল হাসান।
শনিবার থেকে রোববার দুপুর সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত দু’টি পদের জন্য ২৫ জন আগ্রহী প্রার্থী ফরম তুলেছেন। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সংখ্যা শেষ পর্যন্ত ৬০ ছাড়িয়ে যাবে। ফরম বিক্রি চলবে রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুর ২ টা পর্যন্ত।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রনেতা ফজলুল হক মিলন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, আজিজুল বারী হেলাল, এবিএম মোশাররফ হোসেন, শফিউল বারী বাবু, আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, রাজিব আহসান ও আকরামুল হাসান।