গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, “শেরে বাংলাকে অনুসরণ করতে হলে আত্মোৎসর্গের রাজনীতিতে ফিরে আসতে হবে। পচন ধরা অবক্ষয়ের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সৃজনশীল এবং গুণগতমানের রাজনীতিকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। রাজনীতি হতে হবে কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষসহ সারা দেশের মানুষের কল্যাণের রাজনীতি। রাজনীতি এমন হবে না যে আমি নেতা, আমি জমিদার আর সব মানুষ প্রজা। সে রাজনীতির দিন শেষ হয়ে গেছে।”
শনিবার (২৬ অক্টোবর ২০১৯) সকালে রাজধানীর শেরে বাংলার মাজার চত্বরে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ১৪৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শেরে বাংলা জাতীয় সংসদ ও বিশ্ব বাঙালি সম্মেলন-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত শেরে বাংলার কর্মময় জীবনের উপর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, “শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ছিলেন বাঙালি জাতির ইতিহাসের অন্যতম মহানায়ক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা একদিনে আসেনি। দীর্ঘ ধারাবাহিক পথপরিক্রমায় আন্দোলন-সংগ্রাম আর ত্যাগ স্বীকার করে বাঙালি একটি স্থানে এসে পৌঁছায়। সে ধারাবাহিকতায় বাঙালির অধিকার আদায়ের জন্য শেরে বাংলা যে সময় ভূমিকা রেখেছিলেন, সে সময় কথা বলার দুঃসাহস অনেকেই রাখতেন না। তিনি কখনো রাজনৈতিকভাবে, কখনো প্রশাসক হিসেবে, কখেনো সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে নানাভাবে বাঙালির অধিকারের জন্য কাজ করেছেন।”
তিনি আরো বলেন, “শেরে বাংলার অনুসৃত নীতিকে ধারণ করে বাংলাদেশে অনেকেই রাজনীতি করেছেন। কিন্তু শেরে বাংলার নীতিকে প্রকৃতভাবে অনুসরণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন বাঙালি জাতির ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলার রাজনীতি ছিলো মানুষের জন্য। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিও তাই ছিলো। শেরে বাংলা ও বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ছিলো ভোগের নয়, ত্যাগের রাজনীতি।”
মন্ত্রী বলেন, “শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের যে স্বপ্ন ছিলো, সে স্বপ্নকে ধারণ এবং বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সে স্বপ্নকে পরিপূর্ণতা দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমাদের দায়িত্ব শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতি বিরোধী ও অনৈতিকতা বিরোধী অভিযানে, বাঙালি জাগরণের অভিযানে তাঁকে দল-মত নির্বিশেষে সকলে মিলে সহযোগিতা করতে হবে।”
তিনি আরো যোগ করেন, “শেরে বাংলার জন্মবার্ষিকীতে আমাদের শপথ নিতে হবে, যারা অন্যায়, অবিচার, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদক, ইভটিজিং-এ জড়িত তাদেরকে রাজনীতির মাঠ থেকে ঝেটিয়ে বিদায় করতে হবে।”
দুর্নীতির দায়ে কারাদন্ডপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ ও তাদের সহযোগীদের ষড়যন্ত্র এখনো চলছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “আবার তারা সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের চিন্তা করছে। কিন্তু অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের যে সুন্দর, নির্মল চরিত্র এটাকে আমাদের ধারণ করতে হবে। আজকের দিনে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার স্বপ্নকে ধারণ করে আমাদেরকে শপথ নিতে হবে।”
শেরে বাংলা জাতীয় সংসদ ও বিশ্ব বাঙালি সম্মেলন-এর সভাপতি মুহম্মদ আবদুল খালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান। অনুষ্ঠানে শেরে বাংলা জাতীয় সংসদ ও বিশ্ব বাঙালি সম্মেলন-এর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে অতিথিবৃন্দ শেরে বাংলার মাজারে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।