এই সরকার নিজেদের পতন নিজেরাই ডেকে এনেছেন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, ‘খালেদ শামীমের অর্থ কিছুই না, অনেক গভীরে দুর্নীতি ঢুকে গেছে। এই দুর্নীতি থেকে এই সরকার বাংলাদেশকে কখনো ফিরিয়ে আনতে পারবে না এবং এটির মাধ্যমে তাদের নিজেদের পতন নিজেরাই ডেকে এনেছেন।’
শনিবার (৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মৎসজীবী দল কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এর বিষয় উল্লেখ করে মওদুদ বলেন, ‘এই যে ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে। এর মোকাবেলায় আমাদের জানা মতে সরকার কোনও যথেষ্ট পরিমাণ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আজকে ঘূর্ণিঝড় আঘাত করলে আমাদের লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সুতরাং এই অবস্থায় আমরা অতীতেও দেখেছি সরকারের অবহেলার কারণে আমাদের দরিদ্র জনগোষ্ঠী এসব দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘সরকার শুধু উন্নয়নের রোল মডেল বলে গলা ফাটাচ্ছেন। কিন্তু কিসের উন্নয়নের রোল মডেল? ১৫ মিনিট বৃষ্টি হলে যে দেশের রাজধানী পানির নিচে চলে যায় এটাকে বলে উন্নয়নের রোল মডেল? যে রাজধানীতে এক কিলোমিটার রাস্তা যেতে ৪৫ মিনিট সময় লাগে এটা নাকি উন্নয়নের মডেল। কে বিশ্বাস করবে একথা? কেউ বিশ্বাস করবে না।’
তিনি বলেন, ‘অবশ্যই বাংলাদেশ মডেল। তবে সেটা গণতন্ত্রহীনতা মডেল, জবাবদিহীনাতার মডেল, বিচারহীনতার মডেল, নারী-শিশু নির্যাতনের মডেল, নারী-শিশু ধর্ষণের মডেল।’
৭ নভেম্বর শহীদ জিয়া ক্যান্টনমেন্টে তার বাসভবনে বন্দি ছিলেন মন্তব্য করে সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সিপাহী-জনতা তাকে মুক্ত করে এনে ক্ষমতায় বসিয়েছেন। তিনি কোন ক্রু করেননি, কোন নির্বাচিত সরকারকে অপসারণ করেননি। শহীদ জিয়া সংবিধানকে বাতিল করেননি, শহীদ জিয়া সামরিক আইন জারি করেননি। শহীদ জিয়া সংসদ বাতিল করেননি। ১৯৭৫ সামরিক আইন জারি করে সংসদ বাতিল করেছিলেন এই আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদ। এই আওয়ামী লীগ মিথ্যাচার করে।’
তিনি বলেন, ‘অন্য সব কারণ বাদ দিলেও স্বাধীনতার ঘোষণা ও দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া এই দুটি কারণে শহীদ জিয়া বাংলাদেশে অমর হয়ে থাকবে।’
আইনের শাসন বলতে দেশে কিছু নাই মন্তব্য করে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক আরও বলেন, ‘আজকে আমাদের নেত্রী দেড় বছর যাবত একটি ভুয়া রায়ে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। সরকারের প্রভাবের কারণে বিচারপতিরা স্বাধীনভাবে, মুক্তভাবে কাজ করতে পারছে না। যে যত কথাই বলুক আজকে এ কথাটা সত্যি। যার ফলে বিচারালয় এত ভয়-ভীতি প্রবেশ করেছে।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মওদুদ বলেন, ‘গত ১০ বছর যাবত যতবার তিনি ভারতে যান শুধু দিয়ে আসেন কিছু নিয়ে আসেন না। কেন? কারণ, শুধু ক্ষমতা থাকার জন্য।’
সরকারের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় থাকার জন্য সবকিছু দিয়ে দিতে হবে? দয়া করে এটা করবেন না। এটা দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে না।’
বিএনপি’র এই নীতিনির্ধারক আরও বলেন, ‘আমি সরকারের প্রতি আবেদন জানাবো আপনারা ক্ষমতায় থাকার জন্য যা খুশি করেন কিন্তু দেশের স্বার্থ বিক্রি করে দিয়েন না। এটা ঠিক হবে না।’
জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মাহাতাবের সভাপতিত্বে ও সাদস্য সচিব আব্দুর রহিমের সঞ্চলনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মৎসবিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান কাজল প্রমুখ।