খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা ক্রমান্বয়ে চরম অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) সকালে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজধানীর কলাবাগান এলাকায় বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিল শেষে তিনি একথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়ে ল্যাবএইড হাসপাতালের কাছে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন রিজভী।
মিছিল শেষে এক পথসভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রিজভী আহমেদ বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন ও চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা ক্রমান্বয়ে চরম অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। দেশনেত্রীকে চিকিৎসা দেয়ার নামে নানা টালবাহানা ও জনগণকে ধোঁকা দেয়ার চেষ্টা করছে সরকার।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের দাবি উপেক্ষা করে বেগম জিয়াকে কোনো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হয়নি। তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটা সত্ত্বেও সরকারের লোকেরা বেগম জিয়া সুস্থ আছেন বলে তোতা পাখির মতো সরকারের শেখানো বুলি আউড়িয়ে যাচ্ছে।’
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে বিনা চিকিৎসায় আপনি অমানবিক কষ্ট দিচ্ছেন। বেগম জিয়ার প্রতি এই নিষ্ঠুরতা বিশ্বের স্বৈরশাসকরা যে আচরণ করে সেই আচরণেরই সমতুল্য। বেগম জিয়াকে আর কষ্ট না দিয়ে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দিন। আপনি জনগণের পুঞ্জীভূত ক্রোধ আঁচ করতে পারছেন না বলেই বিএনপি চেয়ারপারসনকে মুক্তি না দিয়ে তাকে তিলে তিলে নিঃশেষ করার চেষ্টায় উঠেপড়ে লেগেছেন। কিন্তু আপনার নেতৃত্বে পরিচালিত ফ্যাসিবাদী সরকারের লোহার খাঁচা ভেঙে দেশনেত্রীকে মুক্ত করার জন্য জনগণ এখন চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।’
দেশে ভয়াবহ দুঃশাসনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের এখন নাভিশ্বাস উঠেছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘দেশ পরিচালনায় আপনারা এখন চারদিক দিয়েই ব্যর্থ। বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর ভয়াবহ দুঃশাসনকে প্রতিরোধ করার জন্য মানুষ এখন পথে পথে প্রস্তুত হয়ে রয়েছে। সরকারের উদ্দেশে বলতে চাই-পৃথিবীর অতীত ইতিহাস ভুলে যাবেন না, কোনো স্বৈরাচারী শাসক এভাবে দেশে দুঃশাসন চালু রেখে জনগণের রোষানল থেকে রেহাই পায়নি। যুগে যুগে বিশ্বে স্বৈরশাসকের পতনের মতোই আপনাদেরও যেকোনো মুহূর্তে পতনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আমি আবারও অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।’
বিক্ষোভ মিছিলে অন্যদের মধ্যে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু আশফাক, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন, পশ্চিম ছাত্রদল নেতা কামরুজ্জামান জুয়েল এবং যুবদল নেতা সোহেল প্রমুখ অংশ নেন।