ভারত ঐতিহাসিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। সেখান থেকে পদস্খলন হলে ভারতের ঐতিহাসিক অবস্থান দুর্বল হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
ভারতের লোকসভায় বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বিপুল ভোটে পাস হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় আজ বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত ঐতিহাসিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। সেখান থেকে পদস্খলন হলে ভারতের যে ঐতিহাসিক অবস্থান, তা দুর্বল হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এ ব্যাপারে যে কথা উঠেছে, সেগুলো সত্য না। আমাদের দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন, ধর্মীয় নির্যাতন হয় না। আমাদের দেশে ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার। আমাদের দেশে অন্য ধর্মের কেউ নির্যাতিত হয় না।’
‘সম্প্রতি বিদেশ থেকে আমাদের অনেক লোক দেশে ফিরে আসছে, তার কারণ হচ্ছে আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছি এবং এখানে সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে আমাদের।’
সব ধর্মের লোকদের সমান দৃষ্টিতে দেখা হয় জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাদের (অন্য ধর্মের লোকদের) সমানভাবে একই দৃষ্টিতে দেখি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে। কে, কোন ধর্মের সেটা নিয়ে আমরা কোনো বিচার করি না। বিচার করি, সে বাংলাদেশের নাগরিক কিনা বা তার যোগ্যতার মাপকাঠি। আমাদের সব রকমের চাকরি-বাকরিতে সকল ধর্মের লোক রয়েছে অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে।’
ভারতের দেওয়া তথ্য সত্য নয় উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত যে তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হচ্ছে, কথাটা সত্য না। এবং যারা তথ্য দিয়েছেন তারা সত্য বলেননি। ’
আবদুল মোমেন বলেন, ‘ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। দুই দেশের মধ্যে এখন অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক চলছে, যা সোনালি অধ্যায় নামে পরিচিত। আমাদের দেশের মানুষ আশা করে ভারত এমন কিছু করবে না, যা আমাদের জনগণের দুশ্চিন্তার কারণ হবে।’
এর আগে সোমবার ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় বহুল আলোচিত নাগরিকত্ব বিল পাস হয়, যাতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে শরণার্থী হিসেবে যাওয়া অমুসলিমদের ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
কিন্তু পার্লামেন্টে মুসলিম সদস্যরা এই বিলের বিরোধিতা করলে যুক্তি খণ্ডন করে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ। সেখানে তিনি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন।