বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘মেডিকেল রিপোর্টের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের রিপোর্ট। বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে- যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের, ভাষা আন্দোলনের ও স্বৈরাচারকে বিতাড়িত করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আমি মনে করি, বাংলাদেশের মানুষ খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের সিদ্ধান্ত তারা নিয়ে ফেলেছে।’
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) একাংশ আয়োজিত খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
খসরু বলেন, ‘আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে এবং প্রস্তুত থাকতে হবে। যেন দেশনেত্রী মুক্তির মাধ্যমে আমরা দেশকে মুক্তি করতে পারি। আমি মনে করি, মেডিকেল রিপোর্টের চাইতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের রিপোর্ট। এই রিপোর্টের গুরুত্ব বুঝে নেন। এরপরও যদি না বুঝেন তাহলে স্বৈরাচারের বিষয়ে মানুষ যেভাবে জয়ী হয়েছে, দেশনেত্রী মুক্তির বিষয়েও মানুষ সেভাবে জয়ী হবে।’
তিনি বলেন, ‘মেডিকেল রিপোর্টের এমন দুর্গতি আমি জীবনে কখনো দেখিনি। কিছু ডাক্তার একটা মেডিকেল রিপোর্ট দিয়েছে তারপরে আবার আরেকটি রিপোর্ট দিতে হবে। একটি জাতি তাকিয়ে আছে একটি মেডিকেল রিপোর্টের দিকে। যারা মেডিকেল রিপোর্ট দিচ্ছেন তাদের অবস্থা বুঝেন এবং যাদের কাছে মেডিকেল রিপোর্ট পাঠানো হবে তাদের অবস্থা বুঝেন। এমন মেডিকেল রিপোর্ট কি কখনো দেখেছেন জীবনে? মেডিকেল রিপোর্ট একটি স্বাভাবিক বিষয়। ডাক্তার যেটা ভালো মনে করেন সেটাই তিনি লিখে দেন। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে যার যেখানে প্রয়োজনীয়তা সেটা মেটানো হয়।’
গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়ার কোনো মেডিকেল রিপোর্টের প্রয়োজন নেই মন্তব্য করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আজকে দেশনেত্রী শরীরের অবস্থা জানে না এমন কোনো মানুষ নেই। তারপরও মেডিকেল রিপোর্ট দরকার। আগের মেডিকেল রিপোর্টে বলেছেন, উনি পঙ্গুত্বের দিকে যাচ্ছেন। উনার আরও উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। এরপরে তো আর কোনো মেডিকেল রিপোর্টের প্রয়োজনীয়তা নেই। তাহলে আরেকটা রিপোর্ট দিতে হবে কেন।’
সাবেক এ বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ডাক্তারদের ওপর নাকি চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। একজন রিপোর্ট দেয়ার পরে সেই রিপোর্ট পরিবর্তনের চাপ নাকি ডাক্তারদের ওপর আসছে। জনগণ এগুলো নিয়ে আলোচনা করছে। সারাদেশে এখন আলোচনার বিষয় হচ্ছে- খালেদা জিয়ার মেডিকেল রিপোর্ট। দেশ কোথায় গিয়েছে এবার ভেবে দেখেন? গণমাধ্যম থেকে জানা গেছে, রিপোর্ট নাকি পৌঁছেছে। রিপোর্টের কী অবস্থা দেখেন, এর মুভমেন্ট পর্যন্ত সবাই জানে। ডাক্তারের রিপোর্টের কথা চিন্তা কইরেন না, জনগণের রিপোর্টের কথা চিন্তা করেন। বাংলাদেশের জনগণ কী রিপোর্ট দিচ্ছে সেটা ভেবে কাজ করেন।’
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে আমীর খসরু বলেন, ‘আজকে আস্তে আস্তে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান তারা দখল করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো দখল করে বাংলাদেশের মানুষের ওপর স্টিমরোলার চালিয়ে ক্ষমতায় থাকার প্রক্রিয়া চলছে। রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার যে প্রক্রিয়া চলছে এ প্রক্রিয়া তো চলতে পারে না।’
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক আব্দুল করিম আব্বাসির সভাপতিত্বে এ সময় আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ।