একাত্তরের পর কোনো মুসলমান ভারতে যায়নি দাবি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ভারত জানিয়েছে তারা কোনো হিন্দু, বৌদ্ধ ও খৃষ্টানকে তাড়াবে না। তাদের এই অবস্থানকে আমি সাধুবাদ জানাই। কারণ কোনো মুসলমান ভারতে যায়নি।
ভারতের এনআরসি প্রসঙ্গে তিনি বলেন: এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। সেখানে আমি কথা বলতে চাই না। ভারতে গিয়ে আমি প্রথমেই বলেছি, তোমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে আমরা কিছু বলতে চাই না।
মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র চলমান দুর্নীতি, মাদক ও মজুদদারের বিরুদ্ধে অভিযানে কৃষকলীগের একাত্মতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান বলেন: ‘‘কিছু দিন আগে ভারতের এক সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেছিলো বাংলাদেশ থেকে দেড় কোটি মানুষ না-কি ভারতে চলে আসছে? আমি তাকে বললাম আপনি যদি ১৯৪৭ সালের কথা বলেন, তখন দেড় কোটি ভারত থেকে আসছে, তখন দেড় কোটি গেছে, ঐ সময়ে কথা। একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে এদেশের হিন্দু ঐ দেশে চলে গেছে, ঐ দেশের মুসলমান এ দেশে চলে আসছে। এটা সর্ব স্বীকৃত। ৭১-এর পর কোনো মুসলমান ভারতে যায়নি।’’
রাজাকারের তালিকা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন: রাজাকারের তালিকা নিয়ে একটা প্রশ্ন আসছে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় রাজাকারের তালিকা করছে। আমাদের কাছে দাবি করে তারা চিঠি পাঠিয়েছিলেন, আমাদের কাছে যে সমস্ত তথ্য আছে সেগুলো যেনো পাঠানো হয়। রাজাকারের লিষ্ট তৈরি করা দূরহ ব্যাপার। আমরা প্রাথমিক ভাবে দালাল আইনে যাদের নামে মামলা হয়েছিল, সেই দালাল আইনের লিস্টটা আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি। সেই লিস্টে আমরা মন্তব্য করে দিয়েছি, অনেকের নামের মামলা উড্র করা হয়েছিলো। সেটা তালিকায় যাথাযথভাবে আসেনি। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের রাজাকারের তালিকা নিয়ে আরো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত হবে।
সুশাসন প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত শুদ্ধি অভিযান চলবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন: অনেকেই মনে করেন আমরা থেমে গেছি। আমরা আসলে থেকে নেই। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা এই অভিযান চলমান রাখবো। তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আমরা তথ্যভিত্তিক অভিযান চালাবো। তাই মনে হচ্ছে শুদ্ধি অভিযান থেমে গেছে, শুদ্ধি অভিযান চলমান থাকবে।
এসময় দুর্নীতি, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ ও মাদকের বিরুদ্ধে শপথ নেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দ। শপথ বাক্য পাঠ করান ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দীকি। শপথ বাক্য পাঠ করার পর কৃষকলীগের নবনির্বাচিত সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ বলেন: মননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষিকরত্ন শেখ হাসিনা যাথাসময়ে যাথাযথ সিদ্ধান্ত নেন। চলমান দুর্নীতি, মাদক ও মজুদদারের বিরুদ্ধে অভিযানে নেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে কৃষকলীগ আজ শপথ নিয়েছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আছি।
সন্ত্রাস-মাদক, দুর্নীতির বিরুদ্ধে শপথ নেয়ায় কৃষক লীগকে ধন্যবাদ জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। বাইরের দেশ থেকে আমাদের দেশে মাদক প্রবেশ করে। এ বিষয় আমরা কঠোর থেকে কঠোরতর অবস্থান নিয়েছি। মাদক সেবনকারী, মাদক ব্যবসায়ীরা যেন কোন ভাবে ছাড় না পায় এজন্য আমরা নির্দেশনা ও দিয়েছি। আজকে কৃষকলীগ এর বিরুদ্ধে যে শপথ নিয়েছে আমরা তাকে সাধুবাদ জানাই।
কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দীকি, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি প্রমুখ।