ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র বক্তব্যকে সমর্থন করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া বক্তব্য দলটির ঘৃণ্য প্রতিহিংসার রাজনীতির ধারাবাহিকতা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব অমিত শাহর বক্তব্যকে সমর্থন করে যে মন্তব্য করেছেন, তা সম্পূর্ণরূপেই আওয়ামী লীগের ঘৃণ্য প্রতিহিংসার রাজনীতির ধারাবাহিকতামাত্র। যা ভারতের বিতর্কিত “নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসি” কার্যক্রমকে আগাম বৈধতা দেয়।’
গত ২৩ ডিসেম্বর সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘২০০১ সাল থেকে যে মাইনরিটি পারসিউকিউশন এ দেশে হয়েছে, এটা কেবলমাত্র একাত্তরের বর্বরতার সঙ্গেই তুলনীয়। কাজেই এখানে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার কোনো উপায় নেই। বিএনপি যতই সত্যকে চাপা দিতে চাক, আপনারা জানেন, সাংবাদিকরাও জানেন, তখন কীভাবে মাইনরিটির ওপর অত্যাচার হয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়। ওই অবস্থায় মাইনরিটিদের (সংখ্যালঘু) দেশ থেকে পলায়ন করাই ছিল স্বাভাবিক।’
ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে দক্ষিণ এশিয়া, জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। এমন পরিস্থিতিতে ওবায়দুল কাদের অমিত শাহর বক্তব্যের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছেন। এ অবস্থান নিয়ে তিনি জাতিকে ক্ষুব্ধ করেছেন। ওবায়দুল কাদের, অমিত শাহ, ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র রবিশ কুমার বাংলাদেশ, বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বৈষম্যমূলক, ধর্মীয় বিভক্তি সৃষ্টিকারী।’
ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের পক্ষে দেশের স্বার্থবিরোধী যেকোনো বক্তব্য প্রদান থেকে তিনি সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকবেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনি (ওবায়দুল কাদের) এবং আপনার অবৈধ দেশের স্বার্থবিরোধী সরকার অমিত শাহের বক্তব্যের পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে সুস্পষ্টভাবে শুধুমাত্র এ দেশের মানুষের স্বার্থবিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেননি। একইসাথে বিতর্কিত নাগরিক সংশোধনী আইন ও এনআরসি’র ফলে ক্ষতিগ্রস্ত সকল নিরীহ সাধারণ ভারতীয় মানুষের স্বার্থহানিকর ঘৃণ্য সহযোগীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
এর আগে ভারতের লোক সভায় দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাবস্থায় সেখানে ব্যাপক হারে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে। নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় ভারতে পালিয়ে এসেছে। ’