বিভিন্ন দূতাবাসে কর্মরত বাংলাদেশিদের বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে দূতাবাসগুলো গর্হিত কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাদের বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে কীভাবে গ্রহণ করলো? নির্বাচন কমিশন (ইসি) দেশিদের বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে গ্রহণ করে ঠিক করেনি।’
আজ শনিবার ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রাজধানীর সিটি কলেজ কেন্দ্রে নিজের ভোট প্রদানের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
দূতাবাসে কর্মরত বাংলাদেশিদের বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন, তাদের দেশে ভোট কেমন হয় এমন কিছু কিছু নমুনা আমাদের জানা আছে। একটা কাজ তারা ঠিক করেনি। তাদের বিভিন্ন দূতাবাসে বাংলাদেশি নাগরিক যারা চাকরি করে, তাদেরকে তারা বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে অত্যন্ত গর্হিত কাজ করেছে। তারা বিদেশি হয় কি করে? পর্যবেক্ষক হয় কি করে? ওখানে তারা চাকরি করে তাদেরকে তারা বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে পাঠাতে পারেন না। এটা সঠিক কাজ তারা করেননি।’
এসব পর্যবেক্ষকদের পরিচয় নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘এদের মধ্যে অনেক বৈরী লোক আছে যাদের আমি চিনি। কারও পিতা হয়তো সেই ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিল বা কেউ ছিলে স্বাধীনতাবিরোধী। যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা চালিয়েছে, মা-বোনদের ইজ্জত লুটেছে বা পাকিস্তানি দালালদের সহযোগিতা করেছে। তাদের উত্তরসূরী এমন অনেক আছে। তারা রাষ্ট্রদূতদের ওখানে চাকরি করে। তাদের নামও তারা তালিকায় দিয়েছে। এটা সঠিক কাজ তারা করেনি।’
আর নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এটা কীভাবে গ্রহণ করল? আইনে স্পষ্ট বলা আছে, বিদেশি পর্যবেক্ষক মানে বিদেশি হতে হবে। দেশের নাগরিক, কীভাবে তাদের বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করেছে তা আমি জানি না। এটা তারা গ্রহণ করে ঠিক করেনি। তাদের উচিত ওই সমস্ত পর্যবেক্ষক যারা বাংলাদেশের নাগরিক বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি করে তাদের পর্যবেক্ষক হিসেবে গ্রহণ না করে এবং তারা ভোট কেন্দ্রে যাতে আসতে না পারে। ভোট দিতে আসতে পারে, কিন্তু পর্যবেক্ষক হিসেবে না।’
শনিবারের ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভোট পর্যবেক্ষণে ১০টি পশ্চিমা দেশের দূতাবাস থেকে নিয়োগ করা ৭৪ জনকে অনুমতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এদের মধ্যে ২৮ জন বাংলাদেশি, যারা বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি করেন।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক সংস্থা/কূটনৈতিক মিশনের বিদেশি কর্মকর্তা/কর্মচারীকে বিদেশি পর্যবেক্ষক ও স্থানীয়দের স্থানীয় পর্যবেক্ষক হিসেবে গণ্য করা হবে। তার জন্য দেশি ও বিদেশিদের জন্য আলাদা নীতিমালা অনুযায়ী আবেদন করতে হবে।
কিন্তু ঢাকা সিটির ভোটের ক্ষেত্রে এবার দেশি কর্মীদের বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে আবেদন করেছে দূতাবাসগুলো। নির্বাচন কমিশন সেভাবেই তাদের জন্য পরিচয়পত্র ইস্যু করেছে।