ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অস্বাভাবিক কম ভােট পড়া গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত হতে পারে বলে মনে করেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
ইসি মাহবুব তালুকদার বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে নির্বাচনােত্তর অবস্থা। সম্পর্কে আমার অভিমত জানতে চেয়েছেন কয়েকজন সাংবাদিক। এ বিষয়ে আমার অভিমত নিচে তুলে ধরা হলাে।
”বাংলাদেশে নির্বাচন ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কি? এই প্রশ্নের সামনে আমাদের দাঁড় করিয়েছে ঢাকার
দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। নির্বাচনবিমুখতা গণতন্ত্রহীনতার নামান্তর। এই নির্বাচনে ভােটের প্রতি জনগণের অনীহা দেখে মনে প্রশ্ন জাগে, জাতি কি ক্রমান্বয়ে গণতন্ত্রহীনতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে? ভােটকেন্দ্রে বিরােধীপক্ষের দৃশ্যমান অনুপস্থিতি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তাই নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।”
তিনি আরও বলেন, তফসিল ঘােষণার পর থেকে নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত যেভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে তাতে আচরণবিধি রাখা না-রাখা সমান। আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযােগগুলাে যাচাইয়ের কোনাে লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়নি। আচরণবিধি না মানা এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা গৃহীত না হওয়া ফ্রি-স্টাইল নির্বাচনের উপাদান।
ইসি মাহবুব বলেন, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অস্বাভাবিক কম ভােট পড়া আমার কাছে স্বাভাবিক বলেই মনে হয়। এটা গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত হতে পারে, কিন্তু এটাই বাস্তবচিত্র। জনগণ নির্বাচন বা ভােটের প্রতি নিরাসক্ত হলে নানা প্রকার ব্যাখ্যা বা অপব্যাখ্যা দিয়ে এই বাস্তব অবস্থার চিত্রটি খণ্ডন করা যাবে না।
”গণতন্ত্রকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রয়ােজন- কোনাে কোনাে বিজ্ঞজন এমন বক্তব্য
রেখেছেন। কিন্তু গণতন্ত্র আপন মহিমায় বিকশিত ও উদ্ভাসিত হতে পারে, যদি অবাঞ্ছিত উপায়ে তাকে বন্দী করা না হয়।”
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা ব্যর্থ হলে ক্ষমতা হস্তান্তরের স্বাভাবিক পথ রুদ্ধ হয়ে যায়, সেই অবস্থা কোনােভাবেই কাম্য নয়। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সকল রাজনৈতিক দল আলােচনার টেবিলেই নির্বাচন ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে পারে। তা না হলে অনিশ্চিত গন্তব্যের পথে পা বাড়াবে বাংলাদেশ।