তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি এ বছরই : ভারতের পররাষ্ট্র সচিব

চলতি বছরের মধ্যেই তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি হতে পারে বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। এ সময় জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনের (এনআরসি) কোনো প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে না বলেও জানান তিনি।

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘বাংলাদেশ এবং ভারত : একটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক সেমিনারে যোগ দিয়ে শ্রিংলা এসব কথা বলেন। ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিস) এই সেমিনারের আয়োজন করে।

হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, ‘তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে দুই দেশেরই আগ্রহ রয়েছে। এটা নিয়ে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ চলছে। এই বছরের মধ্যেই তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন- এনআরসি একান্তই অভ্যন্তরীণ বিষয়। এটা প্রতিবেশী দেশে প্রভাব ফেলবে না। ভারতের আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ীই এনআরসি হচ্ছে।’

এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মুজিববর্ষে বাংলাদেশে আসার অপেক্ষায় রয়েছেন বলেও জানান পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, নিজ স্বার্থেই বাংলাদেশের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা চায় ভারত।

ঢাকা ও নয়াদিল্লী অভিন্ন ৫৪ নদীর পানি বণ্টন ও ব্যবস্থাপনার কার্যকর সমাধান করতে চায় বলেও জানান শ্রিংলা। তিনি আরও বলেন, সীমান্তে অপরাধ কর্মকাণ্ড বন্ধে দুদেশের সীমান্তরক্ষীদেরই ভূমিকা রাখতে হবে। সীমান্ত হত্যা যতটা সম্ভব কমাতে চায় ভারত।

এ সময় বাংলাদেশ-মিয়ানমার সম্মত হলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভারত সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলেও জানান দেশটির পররাষ্ট্র সচিব।

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন- ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ, বিসের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক কর্নেল শেখ মাসুদ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, বিস চেয়ারম্যান এম ফজলুল করিম প্রমুখ।

এর আগে সকালে মুজিববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর সূচি চূড়ান্ত করতে ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শ্রিংলাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাসসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে এটিই শ্রিংলার প্রথম বাংলাদেশ সফর। দুদিনের এ সফরে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. একে আবদুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে।

আগামী ১৭ মার্চ ঢাকায় মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির।