ইতালিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বাংলাদেশি

ইতালিতে বাংলাদেশি এক নাগরিক নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। আজ বুধবার ইনস্টিটিউটের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

এ নিয়ে তিন দেশে মোট সাতজন বাংলাদেশির এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেল। যাদের মধ্যে দুইজন ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য একটি দুঃসংবাদ যে, ইতালিতে একজন বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি অসুস্থ, কিন্তু মাইল্ড (গুরুতর নয়) অসুস্থ। তিনি বাসাতেই আছেন, বাসায় রেখেই তার চিকিৎসা করা হচ্ছে।’

দুই মাস আগে চীনের উহান থেকে ছড়াতে শুরু করা নভেল করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা ইতিমধ্যে তিন হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৯৩ হাজারে।

এর আগে সিঙ্গাপুরে পাঁচ প্রবাসী বাংলাদেশি এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে একজন নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। তাদের মধ্যে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নেওয়া দুজন সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে গেছেন বলে গত শনিবার আইইডিসিআর থেকে জানানো হয়।

তবে চীনে থাকা বাংলাদেশি বা বাংলাদেশে কারও মধ্যে এ পর্যন্ত নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণের তথ্য পাওয়া যায়নি।

আইইডিসিআরের পরিচালক জানান, নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বাংলাদেশের বিমানবন্দরে ইরান, ইতালি, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের ‘অন অ্যারাইভাল’ ভিসা সুবিধা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। ফলে কেউ আসতে চাইলে তাদের আগেই নিয়ম মাফিক ভিসার আবেদন করতে হবে।

‘আমাদের দূতাবাস থেকে তাদের ভিসা নিয়ে আসতে হবে। ভিসা নেওয়ার সময় তাদের যে করোনাভাইরাস নেই বা কোয়ারেন্টাইন পার করেছেন- এমন সার্টিফিকেট দাখিল করতে হবে’, যোগ করেন আইইডিসিআরের পরিচালক।

চলাফেরায় ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপের মাধ্যমে চীনের ভেতরে ভাইরাসের বিস্তার কমিয়ে আনা গেলেও চীনের বাইরে সংক্রমণ বাড়ছে দ্রুত গতিতে।

ইতিমধ্যে ৭৩ দেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে জানিয়ে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, ‘প্রতিদিনই উদ্বেগ আস্তে আস্তে বাড়ছে। ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান ও জাপানকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।”

‘হাঁচি-কাশির মাধ্যমে করোনাভাইরাস বাইরে বেরিয়ে গেলে দুই থেকে সাত ঘণ্টা বেঁচে থাকে। সেদিক থেকে সীমান্ত দিয়ে আসা পণ্যের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই’, বলেন আইইডিসিআরের পরিচালক।

তবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে এমন কোনো দেশে আপাতত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া না যেতে এবং সেসব দেশ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশে না আসার আহ্বান জানান অধ্যাপক ফ্লোরা।

এক প্রশ্নের জবাবে আইইডিসিআরের পরিচালক বলেন, ‘করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে কোনো তথ্য সরকার গোপন করছে না। রোগী বা আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হলে সাথে সাথে জানানো হবে।’