মানুষ কে কী স্লোগান দেবে তা আদালতের রায় দিয়ে হয় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জয় বাংলা স্লোগান নিয়ে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছেন তার প্রেক্ষিতে রিজভী বলেন, জয় বাংলা, মানে বাংলার জয়। যখন বাংলা পরাধীন ছিল তখন জয়ের প্রশ্ন আসছে। ১৯৭১ সালে মানুষ জয়বাংলা স্লোগান দিয়েছে। এরপর তো স্বাধীন হয়ে গেছে দেশ। এখন হচ্ছে টিকে থাকার ব্যাপার। চারিদিকে যারা বাংলাদেশকে ছোট করে রাখতে চায়, খাটো করে রাখতে চায় তাদের আধিপত্য বজায় রাখতে চায়, এই সমস্ত জায়গা থেকে এখন বাংলাদেশের টিকে থাকা.. এই টিকে থাকার জন্য স্লোগান অপরিহার্য।
তিনি বলেন, পাকিস্তানিরা গণতান্ত্রিক অধিকার দেয়নি বলেই তো সেটা যুদ্ধের দিকে টার্ন নিলো। সুতরাং আমি কোন স্লোগান দেবো আদালত কেন পরামর্শ দিতে যাবে? যখন স্বায়ত্তশাসন বা স্বাধীনতা সংগ্রামের আন্দোলন চলছে তখন পাকিস্তানিরা যদি মনে করতো যে, না, স্বাধীনতা সংগ্রাম ঠিক না, তারা কি তখন আদালতের রায় দিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রাম ঠেকাতে পারত? আদালতের রায় দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধ ঠেকাতে পারত না।
রিজভী বলেন, ইতিহাস নির্মাণ হয় জনগণের ইচ্ছা এবং পক্ষের নেতৃত্বের মাধ্যমে। এখানে আদালতের রায়ের কোনো ভূমিকা নেই। কারণ, মানুষ সচেতন হয়ে তার আশা-আকাঙ্ক্ষা অধিকার সম্পর্কে যখন সচেতন হয়, তখন সংগ্রাম করে। আদালতের রায়ের ওপর কি ফরাসি বিপ্লব হয়েছে?
রিজভী বলেন, আদালতের রায়ের ভিত্তিতে কোনো স্বাধীনতা যুদ্ধে হয়নি। কখনও কোন রেভুলেশন হয়নি। সব হয়েছে জনগণের ইচ্ছায়। জনগণ যখন বঞ্চিত হয়েছে। জনগণ যখন পদদলিত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে জনগণ। তখনই একটা পরিবর্তন হয়েছে। সেটা ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হয়েছে। সুতরাং কে কোন স্লোগান দেবে, কোন রাজনৈতিক দল কিভাবে স্লোগান দেবে? কী দেবে? সেটা আদালতের রায় দিয়ে হয় না।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন তারও সমালোচনা করেন রিজভী।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবিরাম স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে কুৎসা ও মিথ্যাচার করে চলছেন। জিয়াউর রহমান সম্পর্কে অবমাননাকর উক্তি করে তিনি উল্লসিত বোধ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।