মহামারি করোনাভাইরাস নিয়ে দেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, করোনা মোকাবিলায় সরকার আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতিসংঘ বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। এ সময় দেশের মানুষকে ভয় না পেয়ে সচেতন থাকার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
আজ সোমবার দুপুর সোয়া ১২টায় মহাখালীতে এমআইএসের সম্মেলন কক্ষ থেকে আইইডিসিআরের নিয়মিত অনলাইনে ব্রিফিংয়ে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা আরও ১৭টি নতুন ল্যাব স্থাপন করবো। পরীক্ষার পরিধি আমরা বৃদ্ধি করেছি। ডাক্তার নার্সরা ভালো কাজ করছে। প্রাইভেট ডাক্তাররাও ভালো কাজ করছে। কিন্তু আমাদের কাছে কিছু ইনফরমেশন আসে যে প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ আছে, ডাক্তার একটু কম আছে। আমি আহ্বান করবো এই সময়ে সকলেই যেন যার যার কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে তাদের কাজটি যাতে করেন।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতিসংঘ বাংলাদেশের কাজের প্রশংসা করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন গত দুই দিন আগেই আমরা ডব্লিউএইচও’র সাথে ভিডিও কনফারেন্সে আলাপ করেছি। তারা আমাদের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেছে এবং ইউনাইটেড ন্যাশনের মহাসচিবও প্রশংসা করেছেন। উনারা বলেছেন এটা প্রতিরোধের সবচেয়ে বড় উপায় হলো আইসোলেশনে থাকা, কোয়ারেন্টিনে থাকা এবং সেফ ডিসট্যান্স মেনটেইন করা, যেখানে সেখানে থুতু না ফেলা এবং বারবার হাত ধোয়া- এটা হলো এর সবচেয়ে বড় প্রতিকার।’ ‘আমরা চাইবো চিকিৎসার বাইরে যেন কেউ না থাকেন’ এ প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন জাহিদ মালেক।
গণমাধ্যমের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মিডিয়াকেও বলতে চাই আপনারা সুন্দর কাজ করছেন, তথ্য দিচ্ছেন। কিন্তু এমন কোনো তথ্য দেবেন না যার মাধ্যমে দেশবাসী আতঙ্কিত হয়। এবং এই তথ্য দেওয়াও ঠিক না যে অভাব রয়েছে। আমাদের ইনশাল্লাহ চিকিৎসার কোনো অভাব নাই, কিটসের কোনো অভাব নাই। পরীক্ষারও আমরা যথেষ্ট ব্যবস্থা করেছি এবং আমাদের পিপিইরও আর অভাব নাই। এই তথ্যগুলো দিলে আমি মনে করি মানুষ আশ্বস্ত হবে এবং আপনারা সকলেই সেই কাজটি করে যাচ্ছেন।’
দেশের অবস্থা ভালো আছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের দেশ এখন ভালো আছে, নিরাপদে আছে। মানে প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক আমাদেরকে গাইড করছেন, আমাদের সাথে আলাপ করছেন এবং আমরা আশা করি করোনার সমস্যা থেকে আমরা বেরিয়ে আসবো। বিশ্ববাসীও বেরিয়ে আসবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ যেহেতু অনেক আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছিল সেইজন্য আমরা মনে করি আমরা ইনশাল্লাহ তাড়াতাড়ি এটাকে ভালোভাবে ব্যবস্থা করতে পেরেছি। তুলনামূলকভাবে আমাদের কাজ ভালো হয়েছে এবং আগামীতেও ভালো হবে। ঘাবড়াবার কোনো প্রয়োজন নেই। আশা করি অল্প দিনেই আমরা সমস্যাগুলো দূর করতে পারবো।’
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও একজন করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪৯ জনে দাঁড়ালো এবং মৃতের সংখ্যা পাঁচজনে। আজ দুপুর সোয়া ১২টায় মহাখালীতে এমআইএসের সম্মেলন কক্ষ থেকে আইইডিসিআরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।