গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন শনাক্ত হয়েছে ৬৮৮ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৮২ জনের। আর সব মিলিয়ে শনাক্ত হয়েছে ১০ হাজার ১৪৩ জন।
আজ সোমবার (৪ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুলেটিন প্রকাশে অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
ডা. নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে দেশে আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুবরণকারীরা সবাই পুরুষ। তাঁদের তিনজন ষাটোর্ধ, ৫০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে একজন এবং ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন। এঁদের তিনজন ঢাকার, একজন সিলেটের এবং বাকি একজন ময়মনসিংহের। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ১৮২ জন।
ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ছয় হাজার ২৬০টি। এর মধ্যে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে ৬৮৮ জনকে। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১০ হাজার ১৪৩ জন। এ পর্যন্ত ৮৭ হাজার ৬৯৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আর গতকাল রবিবার (৩ মে) থেকে দেশের ৩৩টি প্রতিষ্ঠানে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আইসোলেশন প্রসঙ্গে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরো ৯০ জনকে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত আইসোলেশনে আছেন এক হাজার ৬৩৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে মুক্ত হয়েছেন ৯১ জন এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে মুক্ত হয়েছেন এক হাজার ১৭৩ জন। সারা দেশে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ৯ হাজার ৬৩৮টি। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে তিন হাজার ৯৪৪টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে আছে পাঁচ হাজার ৬৯৪টি।
কোয়ারেন্টিন প্রসঙ্গেও তথ্য দেওয়া হয় বুলেটিনে। বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন দুই হাজার ৭৪২ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন মোট এক লাখ ৯৫ হাজার ৩৩৪ জন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২৮ হাজার ৫৪৮ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন এক লাখ ৫৩ হাজার ৪০১ জন। ছাড়ের পর বর্তমানে হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪১ হাজার ৯৩৩ জন।
সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৬১৫টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩০ হাজার ৯৫৫ জনকে সেবা প্রদান যাবে বলে জানানো হয় বুলেটিনে।
বুলেটিনে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত ঢাকা শহর এবং ঢাকা বিভাগেই শনাক্তের সংখ্যা সর্বাধিক। ঢাকার পরে রয়েছে পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগ। ঢাকা বিভাগের মধ্যে সর্বাধিক শনাক্ত হয়েছে ঢাকা শহরে। আর ঢাকা শহরের পরই অবস্থান নারায়ণগঞ্জের। চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে সর্বাধিক শনাক্ত হয়েছে কুমিল্লা, সিলেট এবং হবিগঞ্জে।
এ ছাড়া রংপুর বিভাগের রংপুর জেলায় এবং খুলনা বিভাগের যশোর জেলায় এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জেলায়, বরিশাল বিভাগের বরিশাল জেলায় এবং রাজশাহী বিভাগের জয়পুরহাট জেলায় সর্বাধিক শনাক্ত হয়েছে বলে জানানো হয় বুলেটিনে।
বুলেটিনে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং আইইডিসিআর’র হটলাইনে কল এসেছে ৬৯ হাজার ৮২৪টি। এসব কলে যারা কভিড-১৯ বিষয়ে পরামর্শ চেয়েছেন তাদেরকে সে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত হটলাইনে ৩৯ লাখ ৭৫ হাজার ৪৩৬ জনকে কভিড-১৯ বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় মোবাইল ফোন এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ১৮ হাজার ৫৫৪ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আর এ পর্যন্ত এ দুই মাধ্যমে ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ৮২৬ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয় বুলেটিনে।