গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আরো ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ৬১৭ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩৮৬ জনের। আর সব মিলিয়ে শনাক্ত হয়েছেন ২৬ হাজার ৭৩৮ জন।
আজ বুধবার (২০ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুলেটিন প্রকাশে অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
ডা. নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে দেশে আরো ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এঁরা ১৩ জন পুরুষ এবং তিনজন নারী। এঁদের বয়স শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে একজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে পাঁচজন এবং ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে চারজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে দুইজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩৮৬ জনের।
জানানো হয়, নতুন যে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা ঢাকা বিভাগের সাতজন, চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচজন, সিলেট বিভাগের একজন এবং রংপুর বিভাগের তিনজন। হাসপাতালে মারা গেছেন ১২ জন এবং বাসায় চারজন।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২১৪ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন পাঁচ হাজার ২০৭ জন।
ডা. নাসিমা জানান, করোনা পরীক্ষায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরো একটি ল্যাব সংযোজিত হয়েছে। নতুন ল্যাবটি হলো রাজধানীর ইউনাইটেড হসপিটাল লিমিটেড। এ নিয়ে করোনা পরীক্ষায় এখন মোট ল্যাবের সংখ্যা ৪৩। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১১ হাজার ১৩৮টি। আর ৪৩টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১০ হাজার ২০৭টি। এর মধ্যে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে এক হাজার ৬১৭ জনকে। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২৬ হাজার ৭৩৮ জন। আর এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে দুই লাখ তিন হাজার ৮৫২টি।
আইসোলেশন প্রসঙ্গে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরো ৩০০ জনকে। একইসময় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১০০ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন তিন হাজার ৮১৬ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ৮৯৩ জন।
বুলেটিনে জানানো হয়, ঢাকাসহ সারা দেশে মোট আইসোলেশন সংখ্যা ১৩ হাজার ২৮৪টি। এ ছাড়া ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫০০টি ও ময়মনসিংহ নার্সিং ডরমিটরিতে আরো ২০০টি আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুতির কাজ চলছে। বর্তমানে ঢাকা মহানগরীতে সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকা সিটির বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশন শয্যার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৩৪টিতে।
কোয়ারেন্টিন প্রসঙ্গেও তথ্য দেওয়া হয় বুলেটিনে। বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এসেছেন চার হাজার ১১ জন। একইসময় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ২৮৭ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন মোট দুই লাখ ৫১ হাজার ৫০২ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন এক লাখ ৯৮ হাজার ৫৬১ জন। ছাড়ের পর বর্তমানে হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫২ হাজার ৯৪১ জন।
সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৬২৬টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩১ হাজার ৮৪০ জনকে সেবা প্রদান যায় বলে জানানো হয় বুলেটিনে।
বুলেটিনে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং আইইডিসিআর’র হটলাইনে কল এসেছে দুই লাখ ৩৩ হাজার ৫৭৪টি। এসব কলে সবাইকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত হটলাইনে ৬৪ লাখ ৭৮ হাজার ৬৮৪ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়েছে আরো ৩০ জন। এ নিয়ে এখন মোট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়াল ১৬ হাজার ৮১ জনে। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় স্বেচ্ছাসেবক চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়েছে ১১ জন। এ নিয়ে বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে হটলাইনে চার হাজার ১৯৪ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানানো হয় বুলেটিনে।