বাস ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাবকে ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাস চালুর আগেই বাস ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তেই প্রমাণিত হয়-এই সরকার শোষণ ও গরিবকে মারার যন্ত্র। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে প্রায় দ্বিগুণ বাস ভাড়া বৃদ্ধির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে বাস ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, এই সরকার যে জনগণের প্রতি বৈরী তার প্রমাণ গতকাল শতকরা ৮০ শতাংশ বাসভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব। এই করোনা পরিস্থিতিতে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করা হবে এই জন্য বাস-মিনিবাসের ভাড়া ৮০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থা (বিআরটিএ)। ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ নীতি আওয়ামী সরকারের প্রতিষ্ঠিত কর্মসূচি। জনগণকে জিম্মি করে রক্তচোষার নীতি এদের একমাত্র চালিকাশক্তি। একে তো করোনার আঘাতে জনজীবন মহাবিপর্যয়ের মধ্যে, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা এই সপ্তাহে বাঁধভাঙা পানির মতো জনজীবনকে গ্রাস করেছে। দিন আনে দিন খাওয়া মানুষ, দিনমজুর, রিকশা চালকসহ নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এর ওপর এই ভাড়া বৃদ্ধি ঐ নিরন্ন ও বিপন্ন মানুষের ওপরই কষাঘাত।
রোববার (৩১ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক ভিডিও কনফারেন্স তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন- বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েই নাকি ছুটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতার এই বক্তব্য শুনে গোটা জাতি বিস্মিত ও হতবাক। যে বিশেষজ্ঞগণ ‘মৃত্যু-বীজ’ ছড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা কোন বিষয়ের ওপর বিশেষজ্ঞ সেটাই এখন অনুসন্ধানের বিষয়। এরকম বিশেষজ্ঞ ভারতের মতো দেশে পাওয়া গেল না কেন? সেখানে কেন ৩০ জুন পর্যন্ত লকডাউন বলবৎ রাখা হয়েছে? বাংলাদেশে হঠাৎ সবকিছু খুলে দিয়ে আমরা এখন এক কঠিন সংকটের মুখোমুখি।
তিনি বলেন, ব্যাঙের প্রতি বাচ্চাদের ইট-পাটকেল নিক্ষেপের খেলার মতো বাংলাদেশ সরকার মানুষের জীবন নিয়ে খেলছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু সংখ্যার মধ্যে গত সপ্তাহে ২৬ শতাংশ মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যার মধ্যে গত সপ্তাহে ২৮ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এর ওপর আজ থেকে সবকিছু খুলে দিয়ে সরকারের ইচ্ছা কি সারা দেশকে বধ্যভূমি বানানো?
রিজভী আরও বলেন, তথ্যমন্ত্রী বলেছেন-ত্রাণ নিতে আসার লোক পাওয়া যাচ্ছে না। তার এই বক্তব্যে ফরাসি বিপ্লবের সময়ে ষোড়শ লুই-এর স্ত্রীর কথাই মনে পড়ে যায়-রুটি নাই তো কি হয়েছে, কেক খাবে। জনগণের ক্ষুধা, হাহাকার, কর্মহীনতা আমলে না নিয়ে সারাক্ষণ এই সরকার জনগণকে নিয়ে উপহাস করতেই ব্যস্ত।