আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা হলেও এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কুশীলবদের চিহ্নিত করতে হবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। কুশীলবদের চিহ্নিত করতে না পারলে তারা আবার ষড়যন্ত্র করবে।তাই তাদের চিহ্নিত করার জন্য একটি কমিশন গঠন করা অত্যন্ত প্রয়োজন।এ বিষয়ে বিভিন্ন মহল থেকে দাবীও উঠেছে।
রোববার (১৬ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল শোকসভায় সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
শোকসভায় অংশ নেওয়া আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে উদ্দেশ্য করে আইনমন্ত্রী বলেন, এই কমিশনের কর্মপরিধি কি হবে, কিভাবে কাজ করবে তা নিয়ে আমাদের এখন থেকেই চিন্তাভাবনা করা উচিত।কারণ এ দায়িত্ব আইন মন্ত্রণালয় ও আইন কমিশনের উপরই পড়বে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা বলে থাকি কিছু বিপথগামী সামরিক অফিসার বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আসলে তা নয়।যদি তাই হতো, তাহলে তারা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতো।বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করতো না।তারা সেদিন ঢাকায় বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে হত্যা করতে চেয়েছিল, বাংলাদেশকে হত্যা করতে চেয়েছিল।
বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সৌভাগ্যক্রমে সেদিন বিদেশে থাকার কারণে বেঁচে আছেন।তিনি বলেন,খুনিরা সেদিন ভালো করেই বুঝেছিল যে, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা করতে পারলেই বাংলাদেশকে হত্যা করা যাবে।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের মাধ্যমে কয়েকজনকে ফাঁসি দেওয়া হলেও তাঁকে হত্যা করার কলঙ্ক কিন্তু এখনও মোচন হয়নি। এই কলঙ্ক তখনই মোচন হবে যখন আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে পারবো।
সভায় আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির, নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শহীদুল আলম ঝিনুক, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম, বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটেউটের পরিচালক গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ বঙ্গবন্ধুর জীবন আলেখ্য নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা।
আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বেগম মুজিব, শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেলসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নৃশংস হত্যাকাণ্ডে নিহত সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।