নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দিয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। সভাপতি আবু আহম্মেদ মন্নাফি এবং সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি আওয়ামী লীগের দপ্তরে জমা দেন। প্রস্তাবিত কমিটিতে ৩৪ নতুন মুখকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
গত সম্মেলনে মহানগর কমিটি ৭১ সদস্য থেকে বাড়িয়ে ৭৫ সদস্যবিশিষ্ট করার অনুমোদন হয়। পূর্বের ৭১ সদস্যের কমিটিতে দুটি পদ ফাকা ছিলো। ৫ জন সদস্য মারা যাওয়ায় এবং ৪ টি পদ বাড়ায় মোট ১১টি পদ খালি হয়। পূর্বের কমিটি থেকে ২৩ জনকে বাদ দিয়ে মোট ৩৪ টি পদ খালি হয়। এই পদগুলিতে নতুন ৩৪ জনকে পদায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এতে ঠাই পেয়েছেন যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় ও মহানগর কমিটি থেকে ছয়জন, ছাত্রলীগের সাবেক ১৬ জন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১ জন এবং থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ থেকে ১১ জন। এছাড়া ৭৫ সদস্যের মহানগর কমিটিতে ৭৫ জনের নামের সাথে অতিরিক্ত পাঁচটি নাম দেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত কমিটিতে যুবলীগের ছয়জনের মধ্যে একজন সহ-সভাপতি, একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং চারজনকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
সাবেক ছাত্রলীগ থেকে দপ্তর সম্পাদক, সহ-দপ্তর সম্পাদক, প্রচার সম্পাদক, সহ-প্রচার সম্পাদক এবং ১২ জনকে কয়েকটি সম্পাদকীয় ও সদস্য পদে রাখা হয়েছে। তবে এর মধ্যে মহানগর রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ এবং ছাত্ররাজনীতিতে চরমভাবে বিতর্কিত কয়েকজনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রস্তাব করায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ইতিপূর্বে অর্থের বিনিময় একটি থানার কোষাধক্ষ্য পদ বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ থাকা একজনকে সরাসরি ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে প্রস্তাবও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
সহ-সভাপতি পদে একজন সংসদ সদস্য সহ তিনজন সাবেক সহ-সভাপতি, যুবলীগের সাবেক একজন নেতা, একজন সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, একজন সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, বিগত কমিটির তিনজন সদস্য সহ মোট ১১ জনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।
কমিটিতে ৩ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের একজন বিগত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক, একজন বিগত কমিটির একটি উপ-সম্পাদক এবং অন্যজন যুবলীগ থেকে এসেছেন।
সাংগঠনিক সম্পাদকের তিনটি পদে একজন পূর্বের সাংগঠনিক সম্পাদক থেকে একধাপ উপরে উঠে এক নং সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন। বাকি দুজনের একজন পূর্বের কমিটির একটি সম্পাদকের পদ থেকে এসেছেন এবং অপরজন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা।
প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে কাউন্সিলরদের রাখা না রাখা নিয়ে বিতর্কের মাঝে পূর্বের কমিটির সাতজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ বারোজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে, যাদের মধ্যে কয়েকজন ইতিপূর্বে কমিটির সম্পাদকীয় দায়িত্বে ছিলেন।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মন্নাফি পলিটিক্স নিউজকে বলেন, আমরা কমিটি জমা দিয়েছি। কমিটিতে বিতর্ক মুক্ত স্বচ্ছ ব্যক্তিদের রাখার চেষ্টা করেছি। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত দেবেন। রাজনীতিতে অভিজ্ঞ ও পোড় খাওয়া নেতাদের না রেখে সদ্য সাবেক ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দকে প্রাধান্য দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজ করার জন্য আমাদের কিছু গতিশীল লোক প্রয়োজন। সার্বিক বিষয়ে নেত্রী সিদ্ধান্ত দেবেন।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির পলিটিক্স নিউজকে বলেন, পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবিত কমিটি আমরা নেত্রী বরাবর জমা দিয়েছি। তিনি মহানগরের সবাইকেই চিনেন, জানেন। যাচাই-বাছাই করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত দেবেন।