শেখ হাসিনা সরকার দেশে কৃষক ও কৃষি খাতকে উন্নত করতে সকল ধরনের সহযোগিতা করে আসছে। কিন্তু বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে কৃষকেদের সুবিধার কথা চিন্তা করা দূরের কথা স্বৈরাচারী কায়দায় কৃষকের ওপর স্ট্রীম রোলার চালিয়েছিল। তাদের সময়ে সালে ন্যায্যমূল্যে সারের দাবীতে আন্দোলনরত ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করে।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) বিকাল ৩.০০ টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যালয় সম্মুখে বাংলাদেশ কৃষক লীগের উদ্যোগে “কৃষক বাঁচাও-দেশ বাঁচাও” দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ্রের উপস্থিতে অনুষ্টানের সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি।
প্রধান অতিথি বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি তার বক্তব্যে বলেন যে, কৃষি ও কৃষক সংগঠনের সংকটজনক একটি পরিস্থিতিতে নরসিংদী জেলার রায়পুরায় বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত এক কৃষক সমাবেশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি, কৃষকরতœ জননেত্রী শেখ হাসিনা ৩০ অক্টোবরকে “কৃষক বাঁচাও – দেশ বাঁচও দিবস” ঘোষণা করেন। বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষকের কল্যাণে তিনি নির্যাতিত, অবহেলিত কৃষক সমাজের কল্যাণে ১১ দফা দাবী উত্থাপন করেন। শামরিক স্বৈরাচার সেই দাবী না মানলেও ২১ বছর পর কৃষকরতœ জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে সার ও কীটনাশক কৃষি উপকরণের মূল্য হ্রাস করে একটি নতুন কৃষি বিপ্লব সফল করেন।
বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ.ফ.ম. বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ১৯৯৫ সালে ন্যায্যমূল্যে সারের দাবীতে আন্দোলনরত ১৮ জন কৃষককে বিএনপি-জামাত জোট সরকার গুলি করে হত্যা করে। তারা কৃষকের দাবী মেনে নেয়া দূরের কথা স্বৈরাচারী কায়দায় কৃষকের ওপর স্ট্রীম রোলার চালায়। অথচ শেখ হাসিনা সরকার উত্তর বঙ্গের মঙ্গা নিরসন সহ কৃষকের জন্য সার,কীটনাশক, হ্রাসকৃত মূল্যে, ভর্তূকী প্রদান, সেচ, পান ও বিদ্যুৎ সহজলভ্য করেন। এমনকি করোনাকালে পাঁচ হাজার করে টাকা কৃষকের মোবাইলে প্রণোদনা হিসেবে প্রেরণ করে আপদকালীন সুরক্ষা করেন যা সারাবিশ্বে বিরল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ সভাপতির বক্তব্যে বলেন যে, ৩০ শে অক্টোবর কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিবস। কৃষকরতœ শেখ হাসিনা নরসিংদীর রায়পুরায় ১১ দফা দাবী উত্থাপন করে এই দিবসকে “কৃষক বাঁচাও – দেশ বাঁচাও দিবস” হিসেবে ঘোষণা করে। এবং বিরোধী দলে থাকা কালীন তিনি এই দাবী নিয়ে তৎকালীন শাসরিক ও স্বৈরচারের বিরুদ্ধে কৃষক সমাজকে সংগঠিত করেন। আন্দোলনের এক পর্যায় ন্যায্যমূল্যে সারের দাবীতে আন্দোলনরত ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করে।
তিনি বলেন, ১৯৯৫ সালে কৃষকরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে ঐসকল দাবীগুলো ক্রমান্বয়ে বাস্তবায়ন করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে দেশ আজ খাদ্যশস্যে সয়ংসম্পূর্ণ। এছাড়াও বিগত প্রায় এক বছরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাংলাদেশ কৃষক লীগে করোনা কালে ধান কাঁটা, করোনা আক্রান্ত্রদের পরিচর্যা করা, ৪০ লক্ষ বৃক্ষরোপন, বন্যাদূর্গতদের মাঝে সার ও বীজ বিতরণ করে দুঃসময়ে কৃষকরে পাশে দাড়ান।
কৃষক লীগের সভপতি আরও বলেন, আজ কৃষক একর প্রতি প্রায় শতশত ধান উৎপাদন করে। বৈশ্বিক উষ্ণতা মোকাবেলা করতে এ বছরও আষাঢ়-শ্রাবণ-ভাদ্র তিন মাসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী কৃষকরতœ শেখ হাসিনা’র নির্দেশে সারাদেশে কৃষক লীগের নেতা-কর্মীরা প্রায় চল্লিশ লক্ষ গাছের চারা রোপন করেছেন যা অদূর ভবিষ্যতে প্রত্যেকের জন্য একটি সম্পদে পরিণত হবে এবং রাষ্ট্র গ্রীন হাউজের প্রতিক্রিয়া মোকাবেলা করতে সক্ষম হবেন। এছাড়াও বিগত প্রায় এক বছরে কৃষক লীগের দায়িত্ব গ্রহণের পর কৃষকের ধান কাঁটা, করোনা আক্রান্তদের পরিচর্যা করা, প্রায় ৪র্থ বারের মত বন্যাপ্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের মধ্যে সার, বীজ ও খাদ্যশস্য বিতরণ করে দুঃসময়ে কৃষকের পাশে দাড়িয়েছেন।
বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. উম্মে কুলসুম স্মৃতি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী কৃষকরতœ শেখ হাসিনা এমপির নির্দেশে সব সময় কৃষক লীগে নেতা-কর্মীরা কৃষকের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমি নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটি, উপদেষ্টা পরিষদ ও জাতীয় কমিটির নেতৃবৃন্দকে অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আশা করি আপনারা ঐক্যবদ্ধভাবে নিজ নিজ পরিসরে সর্বোচ্চ মেধা ও মননে জাতীর জন্য কাজ করে যাবেন।
সভায় অন্যানদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব শরীফ আশরাফ আলী , আলহাজ্ব মোস্তফা কামাল চৌধুরী, আলহাজ্ব আকবর আলী চৌধুরী, কৃষিবিদ ড. নজরুল ইসলাম, এ্যাড. এ.এফ.এম মোঃ রেজাউল করিম হিরণ প্রমুখ।