তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘মানুষ যখন করোনাভাইরাস নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন, বিএনপি তখন বাস ও মানুষ পোড়ানোর খেলায় মেতেছে।’
রোববার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলনকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন। প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার এসময় উপস্থিত ছিলেন।
ড. হাছান বলেন, ‘আজকে করোনাভাইরাসের কারণে স্তব্ধপ্রায় সমস্ত পৃথিবী এর মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে। বাংলাদেশ এর ব্যতিক্রম নাহলেও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ ধ্বনাত্মক জিডিপি প্রবৃদ্ধির হাতেগোণা ক’টি দেশের মধ্যে অন্যতম, করোনায় আক্রান্তদের মৃত্যুহারও ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোর চেয়ে কম তো বটেই, ভারত-পাকিস্তানের চেয়েও কম। এসত্ত্বেও করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যখন সবাই হিমশিম খাচ্ছে, প্রতিটি মানুষ অত্যন্ত উদ্বিগ্ন, সেই পরিস্থিতিতেও আমরা দেখতে পেলাম গত বৃহস্পতিবার বিএনপি আবার সেই পুরনো বাস পোড়ানো-মানুষ পোড়ানোর খেলায় মেতে উঠেছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের সরকার তো বটেই, সমস্ত শ্রেণি-পেশার মানুষও যখন দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছে, তখন বিএনপি দুর্গতদের পাশে না দাঁড়িয়ে বরং যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়া শুরু করেছে, যেটি অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক, নিন্দনীয় এবং তাদের এই অপরাজনীতি থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারে নাই।’
‘বিএনপির পক্ষ থেকে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা দেখা যাচ্ছে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘নিজেরাই বাস পুড়িয়েছে আবার এটার বিরুদ্ধে তারা নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, যা অত্যন্ত হাস্যকর। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ভিডিও ফুটেজ দেখেই, অনেককে সন্দেহজনক গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই বিএনপির সাথে যুক্ত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আপনারা দেখেছেন, নিতাই রায় চৌধুরীর সাথে তাদের দলের নেত্রী ফরিদা বেগমের কথোপকথনে বলা হয়েছে, যুবদলের ছেলেরা বাসে আগুন দিয়েছে। প্রথম বাসে আগুন দেয়ার ঘটনাটাও কিন্তু নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে একটি সরকারি বাসে। সুতরাং এই অপরাজনীতি যারা করে, তারা কখনো জনগণের রাজনীতির দল হতে পারেনা।’
‘বিএনপি কানাডার আদালত কর্তৃক সন্ত্রাসী দল হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে, সেখানে আপীল আদালতও রায় বহাল রেখেছে’ স্মরণ করিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপিকে কেন সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়েছে সেটির ব্যাখ্যাও আছে। সেখানে বলা হয়েছে, তারা পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে, সরকারি সম্পত্তি, জনগণের সম্পত্তি পুড়িয়েছে, ধ্বংস করেছে -এজন্যই তারা সন্ত্রাসী দল। কোনো সন্ত্রাসী দলের আসলে এদেশে কি রাজনীতি করার অধিকার আছে কি না, সেটিই হচ্ছে বড় প্রশ্ন।’
‘বিএনপি সন্ত্রাসী দলের পাশাপাশি একটি প্রচন্ড মিথ্যাবাদী দলেও রূপান্তরিত হয়েছে’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘অবাক লাগে কিভাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব অবলীলায় মিথ্যা বলে যান। দুনিয়াতে মিথ্যা বলার ক্ষেত্রে যদি কোনো পুরস্কার থাকতো, মির্জা ফখরুল ইসলাম প্রথম পুরস্কার পেতেন। মির্জা ফখরুলকে বলবো এই অপরাজনীতি এবং ক্রমাগত মিথ্যা বলার রাজনীতি থেকে দয়া করে বের হয়ে আসুন।’
সাংবাদিকরা এসময় ‘সম্প্রতি মূর্তির বিরুদ্ধে অনেকে বক্তব্য দিয়েছেন’ উল্লেখ করে মন্তব্য চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘ভাস্কর্য আর মূর্তির মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে, আমি আশা করবো তারা সেটি বুঝতে পারবেন।’
ঢাকা ১৮ ও সিরাজগঞ্জ ১ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে বিএনপির মন্তব্য ‘ভোটার উপস্থিতি কম ও ভোট সুষ্ঠু নয়’ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারির মধ্যে ভোটার উপস্থিতি কম হবে এটাই স্বাভাবিক। সুষ্ঠু ভোট নাহলে তো ভোটার টার্ন আউট অনেক বেশি হতো। বিএনপি আসলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে জয়লাভের উদ্দেশ্যে নয়, তাদের মূল উদ্দেশ্য দু’টি- প্রথম এবং প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে -নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হচ্ছে দলকে টিকিয়ে রাখা। আর তাদের সব অভিযোগ গতানুগতিক। সব নির্বাচনের সময়ই তারা এই অভিযোগ করে থাকেন।’