গণমাধ্যমকর্মীদের করোনাকালের নির্ভীক যোদ্ধা হিসেবে অভিহিত করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘করোনার শুরু থেকেই ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে অত্যন্ত সাহসিতার সাথে সাংবাদিকরা কাজ করে চলেছেন, সত্যিই তা প্রশংসনীয়।
সোমবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) আয়োজিত ‘চিত্রকর্ম ও আলোকচিত্রে করোনায় গণমাধ্যমের লড়াই’ শীর্ষক তিনদিনব্যাপী প্রদর্শনী উদ্বোধনকালে তিনি একথা বলেন।
বিজেসি’র ট্রাস্টি সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজার সভাপতিত্বে আলোচনায় বরেণ্য চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ ও গুলশান হোসেন অনলাইনে যোগ দেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘করোনার শুরু থেকেই ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে অত্যন্ত সাহসিতার সাথে সাংবাদিকরা কাজ করে চলেছেন, সত্যিই তা প্রশংসনীয়। আমি কোনো সাংবাদিককে ভীতি নিয়ে হাতগুটিয়ে বসে থাকতে দেখি নাই। এতে করে আমার অনেক ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করেছেন, যা আমি কখনো ধারণা করতে পারিনি।’
করোনায় যখন দেশে সবকিছু বন্ধ করে দেয়া হয় তখন পুলিশ, স্বাস্থ্যকর্মী এবং সাংবাদিকদের আর কিছু অন্যান্য গাড়ি রাস্তায় চলাচল করে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, এতে করে একে একে ৩৭জন সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন, কয়েকশ’ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
‘এই করোনাকালে সঠিক সংবাদ মানুষের কাছে পৌঁছানোর কাজে এবং গুজব এবং কুচক্রী মহলের নানামুখী ষড়যন্ত্র বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করোনার শুরুতে যে অপচেষ্টা ছিল, সেগুলোর বিরুদ্ধে মূলধারার সাংবাদিক, মূলধারার গণমাধ্যমগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে’, বলেন তথ্যমন্ত্রী।
করোনার সময় বিজেসি-সহসাংবাদিকদের সংগঠনগুলো সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয়, বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে করোনাকালে সাংবাদিকদের যেভাবে সহায়তা দেয়া হয়েছে, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল বা শ্রীলংকা কোনো জায়গায় সাংবাদিকদের করোনাকালে এ ধরণের সহায়তা করা হয়নি। শুধু মৃত্যু হলেই সেখানে সহায়তা দেয়া হয়েছে। আমরা সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে চাকুরিচ্যুত সাংবাদিক যারা দীর্ঘদিন ধরে বেতন পাচ্ছিলেন না, সেই সাংবাদিকদের আমরা এককালীন সহায়তা দিয়েছি। সেটি এখনও অব্যাহত আছে। তাই বিজেসিকে অনুরোধ জানাবো তাদের তালিকা যদি আমাদেরকে দেন তাহলে আমরা সহায়তা করতে পারবো।
বিজেসি’র নির্বাহী শাহনাজ শারমিনের উপস্থাপনায় সভাস্থলে আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান এনডিসি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা গবেষক ডা. সালেহ মাহমুদ তুষার, চিত্রশিল্পী মো: মনিরুজ্জামান ও তাহমিনা হাফিজ লিসা, প্রয়াত সাংবাদিক হুমায়ুন কবির খোকনের স্ত্রী শারমিন সুলতানা রিনা, বিজেসি’র সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ, ট্রাস্টি রাশেদ আহমেদ, নির্বাহী মানস ঘোষ প্রমুখ করোনাকালে গণমাধ্যমকর্মীদের অকুতোভয় সংগ্রামের চিত্র এবং সম্প্রচার খাতের কর্মীদের জন্য বিজেসি’র কর্মতৎপরতার ওপর আলোকপাত করেন।
বরেণ্য চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ, চিত্রকর গুলশান হোসেন, মো: মনিরুজ্জামান, তাহমিনা হাফিজ লিসা ও নাসির আলী মামুনের চিত্রকর্ম ও বিজেসি সদস্যদের তোলা শতাধিক আলোকচিত্রসমৃদ্ধ প্রদর্শনীটি ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকছে।