এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের মা লীলাবতী হালদারসহ ২৫ ব্যক্তির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এই ২৫ জন যাতে বিদেশ না যেতে পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। পাশাপাশি তদন্তের প্রয়োজনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন অনুসারে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে বলেও আদেশে বলা হয়।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেল সমন্বয়ে গঠিত একটি ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।
বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের পাঁচজন আমানতকারীর করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়া হয়। একই সঙ্গে পাঁচ আমানতকারীকে বিবাদী হিসেবে পক্ষভুক্ত করে আদেশ দেন আদালত।
পাঁচ আমানতকারী হলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামালের মেয়ে ড. নাশিদ কামাল, গৃহিণী সামিয়া বিনতে মাহবুব, মো. তরিকুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের সাবেক পরিচালক মো. শওকতুর রহমান ও সাবেক রাষ্ট্রদূত রাজিউল হাসান। এর আগে ৩ জানুয়ারি পিপলস লিজিংয়ে আমানতকারী চার ভুক্তভোগী তাদের বক্তব্য আদালতে তুলে ধরেন। ওইদিন আদালত তাদের বক্তব্য লিখিত আকারে দাখিল করতে বলে ৫ জানুয়ারি শুনানির দিন রাখেন। সে অনুযায়ী আজ তারা লিখিত বক্তব্য দিয়ে আবেদন পেশ করেন।
পাশাপাশি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলার তদন্ত ও তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইন্টারপোলের কাছে পাঠানোর অগ্রগতি আজ আদালতে তুলে ধরেন দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ।
ডেপুটি এটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বাসস’কে বলেন, পি কে হালদার বিষয়ে ইন্টারপোলে রেড নোটিশের পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যের বিস্তারিত আদালতে পেশ করা হয়েছে।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের জানান, ভুক্তভোগী বিনিয়োগকারীরা পিকে হালদারের মা লিলাবতী হালদারসহ ২৫ জনের বিষয়ে আবেদন করেন।
যে ২৫ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে তারা হলেন এস কে শুর (বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর), হারুনুর রশিদ (ফার্স্ট ফাইন্যান্স), উজ্জ্বল কুমার নন্দী, সামি হুদা, অমিতাভ অধিকারী, অবন্তিকা বড়াল, শামীমা (ইন্টারন্যাশনাল লিজিং), রুনাই (ইন্টারন্যাশনাল লিজিং), আই খান (ইন্টারন্যাশনাল লিজিং), সুকুমার মৃধা (ইনকাম ট্যাক্স আইনজীবী), অনিন্দিতা মৃধা, তপন দে, স্বপন কুমার মিস্ত্রি, অভিজিৎ চৌধুরী, রাজিব সোম, ইরফান উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী (ব্যাংক এশিয়ার সাবেক এমডি), অঙ্গন মোহন রায়, নঙ্গ চৌ মং, নিজামুল আহসান, মানিক লাল সমাদ্দার, সোহেল সামস এবং পিকে হালদারকে বিভিন্নভাবে তথ্য দিয়ে সহযোগিতাকারী মাহবুব মুসা, একিও সিদ্দিকী, মোয়াজ্জেম হোসেন ও লিলাবতী হালদার।
হাজার কোটি টাকা পাচার ও লোপাটের অভিযোগ নিয়ে বিদেশে পালিয়ে যান পি কে হালদার। এক পর্যায়ে তিনি দুবাই থেকে দেশে আসবেন আদালতকে এ তথ্য জানালেও আর ফেরেননি।
ভার্চুয়ালি যুক্ত করে গত সপ্তাহে একটি বেসরকারি টিভিতে পি কে হালদারের সাক্ষাৎকার ও বক্তব্য প্রচার করা হয়। বিষয়টি দুদক আবেদন আকারে আদালতের নজরে আনেন। আদালত শুনানি নিয়ে পি কে হালদারসহ বিচারাধীন মামলায় পলাতক, দন্ডিত আসামির বক্তব্য গনমাধ্যমসহ যে কোন প্রচার মাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদেশ দেন।