
গণতান্ত্রিক ভোটে জয়ী সু চিকে মুক্তি দিয়ে ফের তা হতে ক্ষমতা দেওয়ার দাবিতে মিয়ানমারজুড়ে তৃতীয়দিনের মতো বিক্ষোভ চলছে। এরইমধ্যে রাজধানী নেপিদোতে সেই বিক্ষোভ ঠেকাতে জল কামান চালিয়েছে দেশটির পুলিশ।
সোমবার সকালে বিক্ষোভকারীদের জলকামান মেরে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয় বলে একটি ভিডিওতে দেখা গেছে। খবর রয়টার্স ও সিঙ্গাপুর নিউজ লাইভের
নেপিদোর হাজার হাজার বিক্ষোভকারীর একটি দলে হঠাৎই জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। ভিডিওতে দেখা গেছে, কিছু আন্দোলনকারী মুহূর্তেই ছিটকে পড়ে গেছে মাঠিতে। তারা আহত হয়েছে এবং দ্রুত চিকিৎসা দরকার বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।
খবরে বলা হয়েছে, পুলিশের কাছে আবেদন করার পর জলকামান ব্যবহার বন্ধ করা হয়। এরমধ্যে কিছু আন্দোলনকারী ছত্রভঙ্গ হলেও বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক ফটোগ্রাফার জানিয়েছেন, তিনি দেখেছেন জলকামানে দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভিডিওতেও দেখা গেছে, দুইজন আহত হয়েছেন জলকামান চালানোর কারণে।
সোমবার দেশটির শহরে শহরে ছড়িয়ে পড়েছেন হাজার হাজার অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারী। তারা বলছেন, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে আটক অং সান সু চিকে মুক্তি এবং রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকে সামরিক বাহিনীর অপসারণ দাবিতে দেশব্যাপী এ আন্দোলন।
গত ১ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে এর বিরুদ্ধে সব নাগরিককে এক হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে এ আন্দোলন। ইতোমধ্যে প্রতিবাদে যোগও দিয়েছে অনেকে। বলা হচ্ছে, আরও বড় আকারে এবং সংগঠিত হচ্ছে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ।
সোমবার বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের আন্দোলনে যোগ দিয়েছে বৌদ্ধ ভিক্ষুদেরও একটি দল। তাদের সঙ্গে ভ্যানগার্ড হাতে রয়েছেন শত শত শ্রমিক এবং শিক্ষার্থীরাও। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আন্দোলনকারীরা সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) লাল রঙের ব্যানার এবং বৌদ্ধদের বহু রঙের পতাকা উড়াচ্ছেন।
‘আমাদের নেতাদের মুক্তি দিন, আমাদের ভোটকে সম্মান করুন, সামরিক অভ্যুত্থান প্রত্যাখ্যান করুন’ শ্লোগানে প্রতিবাদের জোয়ার উঠেছে মিয়ানমারে। ‘গণতন্ত্রকে বাঁচান এবং স্বৈরশাসনকে না বলুন’ এই শ্লোগানও দিচ্ছে অনেকে। আন্দোলনকারীদের অনেকেই আবার কালো পোশাক পরেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে।
এর আগে দেশটিতে দ্বিতীয়দিনের মতো বড় বিক্ষোভ হয় রোববার। এ দিন ২০০৭ সালে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নেতৃত্বাধীন ‘জাফরান বিপ্লবের’ পরে অভ্যুত্থানবিরোধী সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।
‘ইয়াঙ্গুনের প্রতিটি কোণ থেকে দয়া করে শান্তিপূর্ণভাবে বেরিয়ে আসুন এবং জনগণের সভায় যোগ দিন’ ফেসবুকে এ আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির অ্যাক্টিভিস্ট আই থিনজার মাং। একইসঙ্গে জান্তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নেটওয়ার্ক বন্ধ করা প্রসঙ্গে তিনি বলছেন, প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে সমাবেশ করতে হবে। ভিপিএন নেটওয়ার্কগুলো ব্যবহারের অনুরোধ করেছেন তিনি।
এদিকে, হাজার হাজার মানুষ দেশটির দক্ষিণ-পূর্বের উপকূলীয় শহর দাউই এবং উত্তরের কাচিন রাজ্যের রাজধানীতে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে পদযাত্রা করেছেন। তাদের অনেকেই কালো পোশাক পরে রয়েছে।









