সরকারের আপ্রাণ চেষ্টায় নারীর বাংলাদেশর রোল মডেল: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান সরকারের আপ্রাণ চেষ্টায় নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। নারীরা এখন প্রতিটি ক্ষেত্রে নিশ্চিত ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে। আওয়ামী লীগ সরকার এবং বাংলাদেশ নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় লিঙ্গ সমতায় নানামুখী পরিকল্পনায় নারীদের অধিকার নিশ্চিতে সর্বোচ্চ রূপ-রেখায় রূপান্তরে থাকি।

সোমবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

দিবসটি উপলক্ষে বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নারী আন্দোলনের ইতিহাসে আজ এক গৌরবময় দিন। দীর্ঘ কর্মঘণ্টা আর মজুরি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে নারী আদায় করেছিল তার অধিকার। আদায় করেছিল বিশ্ব সমীহ। নারী তার মেধা ও শ্রম দিয়ে যুগে যুগে সভ্যতার সকল অগ্রগতি এবং উন্নয়নে করেছে সমঅংশীদারি। আর তাই বিশ্বে বদলে গেছে নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি। এখন নারীর কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে স্বীকৃতি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘করোনাকালে নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।

তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের পুনর্বাসন ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে ‘নারী পুনর্বাসন বোর্ড’ গঠন করেন। তিনি জাতীয় জীবনের সকলক্ষেত্রে নারীর সমানাধিকারের বিষয়টি সংবিধানে নিশ্চিত করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে জেন্ডার রেসপন্সিভ বাজেট প্রণয়নসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় তৃণমূল পর্যায়ের নারীদের আত্মকর্মসংস্থানমূলক কর্মে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। হ্রাস পাচ্ছে নারীর দারিদ্র্য। জাতীয় অর্থনীতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে নারীর অংশগ্রহণ। কর্মক্ষেত্রে নারীদের জন্য নির্বিঘ্নে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। দেশে নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় রয়েছে কঠোর আইন এবং আইনের প্রয়োগ। আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা, রাজনীতি, কূটনীতি, আইন প্রণয়ন, নীতি নির্ধারণ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপর্যায়, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, তথ্যপ্রযুক্তি, শিল্প-সাহিত্য, খেলাধুলা প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছি।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও রয়েছে এ দেশের নারীদের ব্যাপক পরিচিতি। চিকিৎসা, রাজনীতি, মানবাধিকার রক্ষা, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন, খেলাধুলা, এভারেস্ট বিজয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এদেশের মেয়েরা অর্জন করেছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সম্মাননা। স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণসহ চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে জোরালো পদক্ষেপ এবং নতুন প্রকল্প ও কর্মসূচি গ্রহণ করে বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় আমরা সফল হয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশের নারী উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করছে। আমরা জাতিসংঘের এমডিজি অ্যাওয়ার্ড, সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড, প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন, এজেন্ট অব চেঞ্জ, শিক্ষায় লিঙ্গসমতা আনার স্বীকৃতিস্বরূপ ইউনেস্কোর ‘শান্তি বৃক্ষ’ এবং গ্লোবাল উইমেন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড ২০১৮-সহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশের নারী পুরুষের যৌথ প্রচেষ্টায় রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়ন, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনসহ ২০৪১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত দেশে বাংলাদেশে উত্তরণ ঘটবে। বিনির্মাণ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। বাস্তবায়িত হবে ডেল্টাপ্ল্যান-২১০০। মুজিববর্ষে এই হোক আমাদের প্রত্যাশা। আমি ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২১’-এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।